ঢাকামঙ্গলবার , ১২ নভেম্বর ২০১৯
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শিক্ষকের হুকুমে ইট বহন, পড়ে গিয়ে হাত ভাঙল মারুফের

একুশে বার্তা
নভেম্বর ১২, ২০১৯ ৬:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রধান শিক্ষক বলে কথা! তার হুমুক, ভাঙা ভবনের পুরনো ইট দুইতলার একটি কক্ষ থেকে তিন তলার ছাদে তুলতে হবে ছাত্রদের। সকাল ১১টার দিকে ক্লাস রেখেই তার নির্দেশ পালনে ইট তুলতে লেগে যায় ১০-১২ জন ছাত্র। কোমল হাতে ভারি ইট নিয়ে কয়েকবার দুইতলা থেকে তিনতলার ছাদে ওঠানামা করতে করতে ছাত্রদের অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ সময় ইটের বোঝা নিয়ে দোতলা পর্যন্ত উঠতেই মাথা ঘুরে পড়ে যায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মারুফ হোসেন (১১)। পড়ে গিয়ে ভেঙে যায় তার ডান হাতটি।

অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের ৫২ নম্বর বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আহত শিশুটি বকুলতলা গ্রামের বাক প্রতিরন্ধী দিনমজুর মো. শাহীন হাওলাদারের ছেলে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন মুক্তা গোপনে আহত ওই ছাত্রকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। রাত ১০ টার দিকে মারুফ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। এ সময় শিশুটির মা মাশুরা বেগম তাকে ওই রাতে আবার হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।

শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাশরুরুল হক জুনায়েদ জানান, শিশুটির ডান হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখানে হাড় ভাঙা কিচিৎসা সম্ভব না, তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠাতে হবে।

আহত শিশুটির মা মাশুরা বেগম জানান, তার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। মানুষের বাড়ি দিনমজুরীর কাজ করে যা পান তা দিয়ে সংসারই চলে না। তার ওপর ছেলের এই অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। প্রধান শিক্ষকের কথায় ইট ওঠাতে গিয়ে আজ ছেলেটি মরতে বসেছ। প্রধান শিক্ষক হাতে ব্যান্ডেজ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পর তার ছেলের আর কোনো খোঁজখবর নেননি।

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক মো. বাবুল খান জানান, তার ছেলে জিয়াদ ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছোট ছাত্রদের দিয়ে তিন তলার ছাদে ইট উঠাতে দেখে তিনি প্রধান শিক্ষককে বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি ফেরেননি।

বকুলতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, প্রধান শিক্ষক নিজে হাতে বেত নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রদের দিয়ে ইট তিনতলার ছাড়ে উঠিয়েছেন। পড়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির নাম-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে ছেলের চিকিৎসা খরচ চালানো সম্ভব না। তাই গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে চিকিৎসায় সহযোগিতার চেষ্টা চলছে।

শরণখোলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, আহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন এটিইও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন মুক্তা বলেন, আমি কোনো ছাত্রদের ইট ওঠাতে বলিনি। তারা নিজেরাই উৎসাহিত হয়ে উঠিয়েছে। আহত ছাত্রকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x