ঢাকাশুক্রবার , ২২ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম

টেকনাফে র‍্যাবের পৃথক অভিযানে ইয়াবা সম্রাট বার্মাইয়া রফিকসহ গ্রেফতার-৪: ইয়াবাসহ আইস অস্ত্র ও বুলেট ফেন্সিডেল উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার
ডিসেম্বর ২২, ২০২৩ ১১:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫শ বোতল ফেন্সিডেল নিয়ে দুভাই এবং ৩লাখ ১৪হাজার ইয়াবা,২কেজি আইস, ২টি শর্টগান ও ৪ রাউন্ড বুলেটসহ মায়ানমারের কুখ্যাত মাদক গডফাদার খ্যাত নবী হোসেনের সহযোগী বার্মাইয়া রফিককে সহযোগী ফরিদসহ গ্রেফতার করেছে।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল এন্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী জানান, ২২ডিসেম্বর রাতের প্রথম প্রহরে কক্সবাজার র‌্যাবদ-১৫এর একটি চৌকস আভিযানিক দল হ্নীলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে বড় একটি মাদকের চালান নিয়ে রঙ্গীখালীর গহীন পাহাড়ী আস্তানায় বার্মাইয়া রফিক বাহিনী অবস্থানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায়। এসময় র‌্যাবের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে মাদক চোরাকারবারীরা দিক-বিদিক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ অস্ত্রধারী এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারির অন্যতম হোতা ও ইয়াবার গডফাদার খ্যাত নবী হোসেনের অন্যতম সহযোগী হোয়াব্রাং এলাকার আব্দুল কাদেরের পুত্র মোঃ রফিক আহাম্মেদ প্রকাশ বার্মাইয়া রফিক (৪০) এবং তার সহযোগী মৌলভী বাজারের নুর আলমের পুত্র ফরিদ আলম (২৮) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ৩লাখ ১৪হাজার ইয়াবা, ২কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, ২টি ওয়ান শুটার গান এবং ৪ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

অপরদিকে রাতের প্রথম প্রহরে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫এর একটি চৌকস আভিযানিক দল টেকনাফ সদর ইউপির হাবিব পাড়ার জনৈক সৈয়দুর রহমানের বসত-ঘরে বিপুল পরিমাণ মাদক বিক্রয়ের জন্য মজুদের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায়। এসময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে মৃত অলি চাঁনের পুত্র সৈয়দুর রহমান (৪৯) এবং আজিজুর রহমান (৪৪) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও আরো সহযোগী ১ ভাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটক ব্যক্তিদ্বয়ের দেহ ও বসত-ঘর তল্লাশী করে মোট ৫শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেনসিডিল সংগ্রহ করে নদীপথে মহেশখালী হয়ে পাশ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য টেকনাফ এনে বিভিন্ন কৌশলে মজুদ করে রাখতো। স্থানীয় মাদক সেবীদের বিক্রির পাশাপাশি মিয়ানমারে পাচার করতো বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ রয়েছে।

র‌্যাব-১৫ সুত্র আরো জানায়,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। বার্মাইয়া রফিক ছোট বেলায়ই তার পিতা-মাতার সাথে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে এবং টেকনাফের হ্নীলা ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের ওয়াব্রাং এলাকায় বসবাস শুরু করে। জীবিকার মাধ্যম হিসেবে সে প্রথমে নাফ নদীতে মাছ ধরে এবং পরে মাছ ধরার আড়ালে স্থানীয় ও মায়ানমারের মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে মাদক ব্যবসার ভয়ংকর একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিকের চাহিদা মোতাবেক পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের চালান প্রথমে নবী হোসেনের মাধ্যমে নাফ নদী পার করে দেয় এবং সেখান থেকে বার্মাইয়া রফিক তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাছ ধরার বোটে করে বাংলাদেশে নিয়ে এসে রঙ্গীখালির গহীন পাহাড়ে তাদের আস্তানায় মজুদ করে। এসময় বার্মাইয়া রফিকসহ তার সিন্ডিকেটের সহযোগীরা আস্তানায় অবস্থান করতো এবং মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে সরবরাহ করতো। মাদকের চালান সরবরাহের পর তারা রঙ্গীখালির পাহাড়ী আস্তানা ত্যাগ করতো। পুনরায় বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান বাংলাদেশে নিয়ে এসে রঙ্গীখালির কোন না কোন পাহাড়ী আস্তানায় মজুদ করে সরবরাহ করার এই প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে চলতে থাকতো।

মাদকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে বার্মাইয়া রফিক জানায় যে,তার নেতৃত্বে পাশ্ববর্তী দেশের বুড়া সিকদারপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী আইয়াজ এবং নাকফুরার সলিম ও জুনায়েদ এর নিকট মাদকের চাহিদা করা হতো। চাহিদা মোতাবেক পাশ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধ পথে নিয়ে আসা মাদক তার নির্ধারিত এজেন্টের নিকট বিক্রয় এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ বার্মাইয়া রফিক তার এক নিকটতম আত্মীয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতো। একইভাবে ক্রয়কৃত মাদকের মূল্য বাবদ ক্যাশ টাকা তার ঐ নিকটতম আত্মীয়ের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট প্রেরণ করতো। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উক্ত টাকা বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয়কর্মীদের মাধ্যমে টেকনাফস্থ কতিপয় হুন্ডী ব্যবসায়ীদের নিকট পাঠাতো। অতঃপর হুন্ডি ব্যবসায়ীরা প্রাপ্ত টাকা টেকনাফস্থ বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় প্রেরণ করতো। পরবর্তীতে এই টাকা ডলারে রূপান্তর করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করতো। যা পরে বিভিন্ন হাত বদল হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছাতো। গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিক মাদক ব্যবসার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ এবং বাংলাদেশের মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন ও মূল সমন্বয়কারী হিসেবেও ভূমিকা পালন করতো। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় হত্যা ও মাদকসহ ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। বার্মাইয়া রফিকের নেতৃত্বে পরিচালিত মাদক সিন্ডিকেটের বেশকিছু সদস্যের বিস্তারিত তথ্য র‌্যাব সংগ্রহ করেছে এবং তাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযানিক কার্য্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়া গ্রেফতারকৃত ফরিদ আলম বার্মাইয়া রফিকের অন্যতম সহযোগী। সে বার্মাইয়া রফিকের নির্দেশে মাদক পাচার সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত ফরিদ বার্মাইয়া রফিকের মাছ ধরার বোটের আড়ালে ইয়াবার চালান নাফ নদীতে হস্তান্তর-গ্রহণ এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী তাদের সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছে দিতো। সে বার্মাইয়া রফিকের সিন্ডিকেটের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ইয়াবা পাচারকালে প্রশাসনের গতিবিধি এবং প্রতিপক্ষ মাদক কারবারীদের বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান করে থাকে।

মিডিয়া কর্মকর্তা আরো জানান,উদ্ধারকৃত আলামতসহ ধৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে পৃথক আইনে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত এজাহার দাখিলের পর টেকনাফ মডেল থানায় সোর্পদ করার কার্য্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এমএসএ/ ইবিসি/ কক্সবাজার

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x