সিডিএ’র উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন

হাজার বছরের বঞ্চনা, নিগ্রহ, অবহেলার বিরুদ্ধে নারী সমাজকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ডাক দেয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
নারীর প্রতি সকল প্রকার অন্যায়-অত্যাচার-নির্যাতন-দমন-পীড়ন বন্ধকরণ, বৈষম্য দূরীকরণ, অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সর্বক্ষেত্রে সমতা অর্জনের লক্ষ্যে এই দিবস পথ প্রদর্শকের ভূমিকা রাখে এবং নারীকে প্রেরণা এবং আত্মপ্রত্যয়ী হতে সহযোগিতা করে। বিশ্বব্যাপী নারীর সামাজিক মর্যাদা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার অর্জনের লক্ষ্যে ১৯১১ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হচ্ছে এবং জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে আন্তর্জাতিক নারী বর্ষ ঘোষণা করার পর থেকে বাংলাদেশে সরকারী-বেসরকারীভাবে দিনটি উদযাপন শুরু হয়। “নারীর প্রতি অন্যায়-নিপীড়ন প্রতিরোধ, নারী তুমি প্রতিবাদী হও” স্লোগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উদযাপন করে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন (সিডিএ)। শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সিডিএ’র কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি আলোচনা সভা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশগ্রহন করেন সিডিএ’র বিভিন্ন স্তরের কর্মীবৃন্দ। আলোচনা সভায় সভাপ্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ’র নির্বাহী পরিচালক শাহ্-ই-মবিন জিননাহ্। নারী দিবস প্রাক্কালে ও পরবর্তীতে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মাননা এবং আত্মার শান্তি কামনায় ১ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে আলোচনা সভার শুভারম্ভ করা হয়। এরপর, সম্মিলিতভাবে গণ-সংগীত পরিবেশন, স্বলিখিত কবিতা আবৃত্তি করা হয়। কর্মীরা আলাচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশে চলমান নারীর প্রতি সহিংসতা, লাঞ্ছনা, বৈষম্যর শিকারসহ তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ডের নেতিবাচক প্রভাবের ভয়াবহতার চিত্র এবং করনীয় বিষয়টি তুলে ধরেন। সেই সাথে সর্বত্র নারী-পুরুষের বিরাজমান বৈষম্য দূর করে সমতার ঐক্য সৃষ্টি করা এবং নারীদের প্রতি সকলের সংবেদনশীল মনোভাব গড়ে তোলার আহব্বান জানানো হয়। সিডিএ’র কর্ম এলাকা দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে জননারী ঐক্য পরিষদের সদস্যগণ স্ব-উদ্যোগে র্যালী, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি উৎযাপন করে এবং সরকার বরাবর স্মারকলীপি প্রদান করা হয়: (ক) নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি ধর্ষণসহ সকল ধরণের নির্যাতন বন্ধ করে দোষীদের দ্রæততম সময়ে বিচার করতে হবে এবং নারীদের স্বাধীনভাবে চলাফেরায় ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, (বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩৭৬ ধারা এবং সংবিধানের ৩৬ নং অনুচ্ছেদ), (খ) সিডও সনদের ৩, ৪, ১১ ও ১৫ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সম্পত্তি, স্বাধীনতা ও সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে আদিবাসী-প্রতিবন্ধী-দলিত-তৃতীয় লিঙ্গসহ সকল নারীদের সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, (গ) খাসজমি নীতিমালায় ভ‚মিহীন-বিধবা স্বামী পরিত্যাক্তা নারীদের জন্য সক্ষম পুত্র সন্তান থাকার শর্তটি বাতিল করে দুস্থ ভ‚মিহীন নারীদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, (গ) কৃষি কাজে নিয়োজিত নারীদের কৃষক হিসেবে মর্যাদা ও স্বীকৃতি দিতে হবে এবং নারী-পুরুষের মধ্যে মজুরি বৈষম্য বিলোপসহ নারী উদ্দ্যোক্তাদের সুদমুক্ত ব্যাংক ঋন প্রদান করতে হবে, (ঘ) রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংষ্কারে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, (ঙ) বিজ্ঞানচর্চায় নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রযুক্তিগত পেশাগুলোতে নারীদের অগ্রাধিকার এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।