রাজশাহীতে বাবার স্বপ্নপূরণের নীরব সাক্ষী: দারিদ্র্য আর অসুস্থতাকে হারিয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াই


দূর থেকে দেখে মনে হলো, হয়তো ক্লান্তিতে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। কাছে গিয়ে কথা বললাম। জানতে চাইলাম, কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। ক্লান্ত, অবসন্ন কণ্ঠে বললেন—”হার্টের একটু সমস্যা আছে, শরীরটা খারাপ লাগছিল, তাই শুয়ে পড়েছি। তবে এখন ভালো লাগছে।”
পেশায় তিনি একজন মাইক্রোবাস চালক, মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন, তার সঙ্গে ভাড়ার ওপর ২০% কমিশন। সংসার চলে টানাটানির মধ্যে, কিন্তু তার স্বপ্নের পরিধি বিশাল।
দুই ছেলে, এক মেয়ে। এই মেয়েটিই আজ ভর্তি পরীক্ষায় বসেছে, বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। মেজো ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। সীমিত আয়ের সংসার, কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন কোনো বাধায় না থামে এটাই একমাত্র লক্ষ্য এই বাবার।
নিজে শুয়ে আছেন ধুলোমাখা পথের এক কোণে, কিন্তু বুকের ভেতর লালন করছেন বিশাল এক স্বপ্ন। সন্তানদের জন্য নিজের সবটুকু নিঃশেষ করতে রাজি, কেবল তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে।
এই ছবিটা শুধু একজন বাবার নয়, হাজারো বাবার গল্প। যারা নিজেরা নীরবে ত্যাগ স্বীকার করেন, যাতে তাদের সন্তানেরা একদিন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলোয় আলোকিত হতে পারে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দৃশ্য সমাজের সেই সব বাবার প্রতিচ্ছবি, যারা দারিদ্র্য আর অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে সন্তানদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। তাদের এই ত্যাগ ও সংগ্রাম আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।