লন্ডনভিত্তিক জরিপ পরিচালনাকারী বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ক্যান্টারের এক জরিপের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির দুই বছরে প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবহার আগের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।
ক্যান্টার যুক্তরাজ্যের ১০ হাজার নারীর ওপর জরিপটি চালিয়েছে। এছাড়া, বৈশ্বিকভাবেও এ–সংক্রান্ত জরিপ চালিয়েছে ক্যান্টার। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের প্রায় তিন লাখ নারীর ওপর এ জরিপ চালিয়েছে।
জরিপে উঠে এসেছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউনের কারণে নারীদের সৌন্দর্যচর্চার রুটিনে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের পর থেকে প্রসাধনসামগ্রীর বিক্রি ১৯% কমে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণেও মানুষ এখন নানাভাবে খরচের লাগাম টানছে। তাতে প্রসাধনীর ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন নারীরা। প্রসাধনসামগ্রী কেনার চেয়ে কিছু মানুষ অন্যান্য পণ্য কেনার দিকে বেশি ধাবিত হচ্ছে। এর ফলে প্রসাধনশিল্প সংকটের মুখে পড়েছে। করোনাভাইরাসের পর নারীরা এখন স্বাভাবিক লুকে থাকার ক্ষেত্রে বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন।
তবে প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবসা কমলেও স্ক্রিনকেয়ার বা ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত সামগ্রীর ব্যবহার কমেনি। কারণ, মহামারিতে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল জেল ব্যবহৃত হয়েছে।
এদিকে, মাস্কের ব্যবহার ও বাসায় বসে কাজ করার ফলে লাল লিপস্টিকের বিক্রি ৪০% কমে গেছে।
জরিপে অংশগ্রহণারীদের একজন চার্লি। তিনি যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। করোনাভাইরাস আসারে আগে চার্লিকে মেকআপ বা সাজগোজ ছাড়া খুব একটা দেখা যেত না। তবে, সেই তিনিই এখন প্রসাধনীর ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিয়েছেন। কাজে গেলেও আগের মতো সাজগোজ করেন না তিনি।চার্লি জানান, করোনাভাইরাসের সময় স্বামী দূরে থাকায় দুই বাচ্চাকে একাই সামলাতে হয়েছে। এর মধ্যে অনেকটা সময় তাকেও কাজের জন্য বাইরে কাটাতে হয়। ভাইরাসের কারণে মেকআপ ছাড়া কাজ করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারলেন, তার এই সাজগোজের বিষয়টিতে কেউ তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আর তাতেই চার্লি মনে করেন, মহামারি তাকে সাজগোজ ছাড়া স্বাভাবিক লুকে থাকার আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।
একই রকম মতামত চার্লির প্রতিষ্ঠান রাইনো সেফটিতে তার সঙ্গে কাজ করা সহকর্মীদেরও। চার্লির প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কেট ওয়াল্টারও স্বীকার করেছেন, তিনিও এখন দৈনন্দিন সাজগোজে খুবই কম সময় দেন। শুধু অফিসে যাওয়ার সময় প্রতিদিন কিছুটা ব্লাশার ও মাসকারা ব্যবহার করেন। খানিকটা রসিকতা করে তিনি বলেন, “আমি দেখতে অসুস্থ হতে চাই না।”
সাজগোজের পেছনে বেশি সময় ব্যয় না করার কথা জানিয়ে কেট ওয়াল্টার বলেন, “যখন আপনি আপনার রান্নাঘরের টেবিলে বসে থাকবেন, আমি আশা করব না আপনি মেকআপ করে স্যুট পরে থাকবেন।”
ক্যান্টারের বিশ্লেষক মায়া জাভিস্লাক বলেন, “প্রসাধনী ব্যবসায়ীদের ভুগতে হবে। কারণ, ভোক্তার কাছ থেকে অর্থ পেতে হলে তাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কারণ, জীবনযাত্রার ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে, যার ফলে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমছে।”
প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।