কামাল শিশির,রামু:
জেলাব্যাপী বহুল আলোচিত গত ৮ অক্টোবর ঈদগাঁও – ঈদগড় সড়কের হিমছড়ী ঢালায় সিএনজি যোগে ঈদগাঁও থেকে বাড়ী ফেরার পথে একদল মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত দলের হাতে খুন হওয়া জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জনি দে’র খুনের সাথে জড়িত কাউকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে জনি দে’র পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দায়ের করা হয়নি কোন অভিযোগ কিংবা মামলা। কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ শেখ মনিরুল গিয়াস জানিয়েছেন, সংগীত শিল্পী জনি দে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টীম মাঠে কাজ করছে এবং আজকের মধ্যেই এ ব্যাপারে থানায় মামলা রজু করা হবে।
থানার ওসি (তদন্ত ) বিপুল চন্দ্র বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে জড়িতদের খুঁজে বের করার জোর চেষ্টা চলছে এবং এজাহার দায়ের করার জন্য বাদীর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জনি দে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের ধরার জন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও কাজ করছে।
এদিকে সংগীত শিল্পী জনি দে কে ডাকাতদল কেন নির্মমভাবে খুন করলো এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। এলাকাবসীর মতে প্রয়াত জনি ছিল একজন অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, নম্র এবং শান্তশিষ্ট প্রকৃতির ছেলে।
বয়সে বড়দের জনি আংকেল বলে সম্বোধন করতেন।
গান গেয়ে দর্শকদের হৃদয়মন জয় করে নেয়া সংগীত শিল্পী জনির এ নির্মম হত্যাকান্ড সম্পর্কে হিসাব মিলাতে পারছেননা এলাকার অনেকেই। ইদগড় বাজারের ব্যবসায়ী জানে আলমের মতে ডাকাত দল যখন সিএনজিতে হানা দেয় তখন শিল্পী জনি হয়ত ডাকাতদের আংকেল বলে সম্বোধন করেছিল। জনি ডাকাতদের চিনে ফেলেছে ভেবে ডাকাতেরা হয়ত তাকে খুন করে থাকতে পারে।
ঈদগড় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দাবী খুন হওয়া জনির কোন শত্রু ছিল একথা তাদের জানা নেই। ছেলে জনি হত্যাকান্ড সম্পর্কে তার পিতা তপন দে’র নিকট জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজী হননি তবে গত ০৯ অক্টোবর সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল জনির পরিবারকে সাত্বনা দিতে তার বাসায় যান বলে জানান।
এদিকে ছেলে হারিয়ে জনির মা শান্তি বালার বিলাপে ঈদগড়ের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। শান্তি বালার দাবী তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনের নিকট ছেলে হত্যার বিচার দাবী করেন।
এদিকে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জনি যে কলেজে অধ্যয়নরত ছিল সেই ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গতকাল ১০ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০ টায় ঈদগাঁও বাসস্টেশন চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
ঈদগাহ সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু হেনা বিশাদের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রলীগ নেতা কাজী আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্টিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক হামিদুল হক ও জাহাঙ্গীর আলমসহ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সভায় বক্তারা জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী ও কলেজ ছাত্র জনিদে হত্যাকান্ডে জড়িতদের আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
এর আগের দিন ০৯ অক্টোবরও ঈদগড় বাজারে জনি হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এতে বক্তব্য বক্তব্য রাখেন। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা ডাকাতি রোধে একটি বিজিবির ক্যাম্প স্থাপন ও জদি দে হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান। পরে সাংসদ সংগীত শিল্পী জনির বাড়ীতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাত্বনা দেন।
১০ অক্টোবর’২০ ।
প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।