পবিপ্রবিতে গবেষণা উৎসব: উপকূলের স্বপ্ন ও চিন্তার এক মহোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, মোঃ রিয়াজুল ইসলামঃ
২৩ বছরের পথ চলার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় পেরিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) এবার প্রথমবারের মতো আয়োজন করল ‘গবেষণা উৎসব’। ২০২৫ সালের ১৮ মে রবিবার এই উৎসবের মধ্য দিয়ে পবিপ্রবি নতুন দিগন্তের সন্ধান দিল—এক ভিন্ন মাত্রার, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষার বার্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের উদ্যোগে ‘Research for Coastal Resilience’—অর্থাৎ উপকূলীয় সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক থিমে দিনভর চলে নানা কর্মসূচি। এটি শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং উপকূলীয় অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধানে নতুন ভাবনার সূচনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান এবং অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের আধার। শিক্ষক ও গবেষকদের নিয়মিত গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।” ভাইস-চ্যান্সেলর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, “গবেষণা শুধু শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সমাজ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে। পবিপ্রবি এই প্রথমবারের মতো গবেষণা উৎসবের মাধ্যমে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করল।”
ইউজিসির প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব বলেন, “পবিপ্রবির গবেষণার মান অত্যন্ত উচ্চ এবং এটি দক্ষিণাঞ্চলের জন্য এক অনন্য সুযোগ।” প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান আরও যোগ করেন, “গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই উৎসব পবিপ্রবিকে উপকূলীয় গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে।”
উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের দশটি গবেষণা প্রকল্প এবং রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের দুইটি বিশেষ প্রকল্পের উপস্থাপনা। এসব গবেষণা উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তব সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
সমাপনীতে নির্বাচিত গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয় এবং গবেষকদের হাতে সম্মাননা স্মারক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মামুন-উর-রশিদ বলেন, “এই উৎসব শুধু আয়োজন নয়, এটি উপকূলের ভবিষ্যৎ গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচনা।”
এভাবেই পবিপ্রবি ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু করল—গবেষণায় গড়া, উপকূলের সংকট-সম্ভাবনার বুনন, এবং টেকসই উন্নয়নের এক প্রাণবন্ত রূপরেখা। আগামী দিনে এই গবেষণা উৎসব উপকূলীয় বাংলাদেশের পরিবর্তনের এক শক্তিশালী ধাক্কা হয়ে উঠবে বলেই আশা সংশ্লিষ্টদের।