ঢাকারবিবার , ১ মে ২০২২
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার আসছেন ১০ লাখ পর্যটক, ৬০ শতাংশ হোটেল কক্ষ আগাম বুকিং

একুশে বার্তা ডেস্ক
মে ১, ২০২২ ৭:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পবিত্র রমজান শেষের পথে, দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ঈদুল ফিতর। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরের দুই ঈদে সৈকতে পর্যটকের সমাগম তেমন ঘটেনি।
এবারের ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে অবস্থিত বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে যাচ্ছেন অন্তত ১০ লাখ পর্যটক। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল–মোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট, কটেজের ৬০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের আগেই অবশিষ্ট কক্ষগুলোও ভাড়া হয়ে যাবে বলে মনে করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, এবার কক্ষভাড়ার বিপরীতে বিশেষ কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত চাপের অজুহাতে পর্যটকের কাছ থেকে যেন অতিরিক্ত কক্ষভাড়া আদায় না করা হয়, সে বিষয়ে তৎপর থাকবেন জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত ও হোটেলমালিকদের পৃথক পর্যবেক্ষক দল।
হোটেলমালিকদের ধারণা, ঈদের পরদিন থেকে টানা সাত দিন পর্যটকের সমাগম থাকবে এই সৈকতে। এ সময় হোটেল, রেস্তোরাঁসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট নানা খাতে ব্যবসা হবে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার।
কক্সবাজার শহরের সাতটি পৃথক হোটেল ও রেস্তোরাঁমালিকদের সংগঠনের সমন্বিত মোর্চা ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ ১৬ দিনে সৈকতে সমাগম হয়েছিল অন্তত ১৫ লাখ পর্যটকের। এরপর উল্লেখযোগ্য হারে পর্যটকের তেমন সমাগম ঘটেনি। এবারের ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে ১৫ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেন্ট মার্টিনে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ থাকায় ১০ লাখ পর্যটক আসতে পারেন।
পর্যটকদের স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যে হোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে সাজসজ্জা ও সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। সৈকতের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসে দৈনিক ১ লাখ ৬০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা আছে। চাপ বেড়ে গেলে হোটেলের কক্ষে পর্যটকদের গাদাগাদি করে রাখতে হয়।
ছাড় নেই, তবু ৬০ শতাংশ হোটেল কক্ষ অগ্রিম বুকিং
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা। সুগন্ধা সৈকতের পাঁচ তারকা হোটেল সি গাল। কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছেন। হোটেলের অধিকাংশ কক্ষ ফাঁকা। হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ ইমরুল ইসলাম ছিদ্দিকী বলেন, ঈদের পরদিন থেকে শতভাগ কক্ষে অতিথি উঠবেন। ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এই ঈদে কক্ষভাড়ার ওপর ছাড় নেই। হোটেলে ১৭৯টি কক্ষে প্রায় ৪০০ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে।
বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের জায়গা টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পেঁচারদ্বীপ এলাকার পরিবেশবান্ধব পর্যটনপল্লী ‘মারমেইড বিচ রিসোর্ট’। এখানে ৫১টি কটেজে থাকার ব্যবস্থা আছে ১২০ জনের। রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ইয়াছির আরাফাত রিসাত বলেন, ঈদের পরদিন থেকে শতভাগ কক্ষ অতিথিতে ভরপুর থাকবে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। কক্ষ ভাড়ার ওপরও থাকছে না কোনো ছাড়। তবে ঈদের পর আগামী ৭ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত বুকিং দেওয়া হলে কক্ষভাড়ায় ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
সৈকতের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সায়মন বিচ রিসোর্ট, হোটেল লংবিচ, হোটেল কক্স টুডে, হোটেল কল্লোল, হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালসহ আশপাশের ৫০টির বেশি হোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ ও রিসোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, পর্যটকদের হয়রানি রোধে প্রতিটি হোটেলে কক্ষভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। অতিরিক্ত কক্ষভাড়া আদায় করা হলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সেবাকেন্দ্রে অভিযোগ করা যাবে। পর্যটকেরা গাড়ি থেকে নামলেই কিছু দালাল লোভনীয় অফার দিয়ে পর্যটকদের চিহ্নিত কিছু রিসোর্ট ও গেস্টহাউসে নিয়ে প্রতারণা কিংবা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়। কিছু ইজিবাইক ও টমটমচালক যাত্রীদের গাড়িতে তুলে প্রতারণা করে। এদের ব্যাপারে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হবে। পর্যটকেরা নিজেরা হোটেল রিসোর্টে গিয়ে কক্ষভাড়া নিলে তাঁদের সুবিধা হবে।
ফাঁকা সৈকত ভরপুরে প্রস্তুতি
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী পয়েন্ট গিয়ে দেখা যায়, বৈরী পরিবেশে সাগর কিছুটা উত্তাল। এ ছাড়া প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। ফাঁকা সৈকতে শতাধিক পর্যটক পানিতে নেমে নোনাজলে শরীর ভেজাচ্ছেন। শতাধিক পর্যটক বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের রূপ উপভোগ করছেন। পর্যটক টানতে বালুচরে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছে সাত-আটটি ঘোড়া। কলাতলীর উত্তরে সুগন্ধা, সি গাল ও লাবণী পয়েন্টেও বিচরণ অন্তত পাঁচ শতাধিক পর্যটকের। ৪ কিলোমিটার সৈকতে ৫টি ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে সমুদ্রে গোসলে নামা পর্যটকদের নজরদারি করছেন ১০-১২ জন লাইফগার্ডকর্মী।
সি-সেফ লাইফগার্ডের ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধায়ক সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, পুরো সৈকতে এখন হাজারখানেক পর্যটক আছেন। ঈদের পরদিন থেকে হাঁটার জায়গা হবে না। এক দিনে সমাগম ঘটবে অন্তত তিন লাখ পর্যটকের।পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পর্যটক না থাকায় পুরো রমজান মাসে সৈকত দখল করে তৈরি পাঁচ শতাধিক দোকানপাট, ঘোড়া, বিচবাইক, চেয়ার-ছাতা (কিটকট), জেডস্কির ব্যবসা, ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রী, চা-কফি বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান, ভাজা মাছ বিক্রির দোকানপাট অচল পড়ে আছে। ঈদের পরদিন থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা–বাণিজ্য চাঙ্গা হয়ে উঠবে। তখন জমজমাট হবে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ইনানীর পাথুরে সৈকত, টেকনাফ সৈকত, রামুর বৌদ্ধপল্লী, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরসহ দর্শনীয় ও বিনোদনের কেন্দ্রগুলো।
পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুহিউদ্দিন বলেন, ভ্রমণে আসা পর্যটকের নিরাপত্তায় প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সন্ধ্যার পর পর্যটকেরা যেন অন্ধকারে ডুবে থাকা সৈকতের তীরের ঝাউবাগানের ভেতরে একাকী কিংবা তিন চাকার যান নিয়ে একাকী মেরিন ড্রাইভ ভ্রমণে না যান, এ ব্যাপারে লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। এসব এলাকায় কৌশলে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারানোর সুযোগ থাকে।

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x