ঢাকারবিবার , ১ মে ২০২২
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম

এমপিওভুক্তিতে আর্থিক লেনদেন: বাতিল হচ্ছে মাঠ কর্মকর্তাদের ক্ষমতা

একুশে বার্তা ডেস্ক
মে ১, ২০২২ ৭:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তীকরণে ভোগান্তি ও আর্থিক দুর্নীতি বন্ধ হতে যাচ্ছে। এমপিওভুক্তি কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণের বদলে সেটি আবারও কেন্দ্রীয়ভাবে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় সেটি বন্ধে ও সহজীকরণে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সংশ্লিষ্টরা জানান, এনটিআরসিএ থেকে সুপারিশ পাওয়ার পর সেসব শিক্ষক এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান, উপজেলা-জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক অফিসের উপ-পরিচালককে টাকা না দিলে এমপিওভুক্তি হয় না। চারটি ধাপে আবেদনকারীকে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা দিতে হচ্ছে। টাকা না দিলে আবেদনকারীকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। চারটি ধাপের একটি ধাপেও টাকা না দিলে ফাইল ফেলে রাখা হয়। টাকা পেলে ফাইল উপরের দিকে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, নিয়োগ পাওয়ার পর এমপিওভুক্তির জন্য প্রথমে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে আর্থিক চুক্তি করতে হয়। তাকে দিয়ে শুরু হয়, শেষ হয় আঞ্চলিক অফিসে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে বাকি তিন ধাপের এক ধরনের চুক্তি থাকে। সে কারণে কোথায় কত টাকা দিয়ে ফাইল ছাড়াতে হবে সেটি তিনি নির্ধারণ করেন।
তারা জানান, যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি সেখানের প্রধানের কথা না শুনে চাকরি করা কঠিন হয়ে যায় বলে বাধ্য হয়ে তার সব নির্দেশনা মেনে নিতে হয়। এসব বিষয় কোথাও জানাজানি হলে এমপিওভুক্তি কাজ আটকে যাবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয় বলে শিক্ষকরা ভয়ে কোথাও মুখ খোলা বা অভিযোগ জানান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএ’র দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ঢাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বলেন, ‘নিয়োগ পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক একদিন আমাকে ডেকে জানান যে, আমার এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন জমা দিতে হবে। এজন্য দুই লাখ টাকা দিতে হবে।’ কোথায় টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে বলেন, এ কাজের জন্য তিনটি ধাপ আছে, উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বাবদ ১ লাখ আর ঢাকা আঞ্চলিক অফিসে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। এর কম দিলে কাজ হবে না, ফাইল পড়ে থাকবে।
তিনি  বলেন, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কাজ টাকা ছাড়া হয় না, এটা শিক্ষামন্ত্রীসহ সবাই জানেন। জেনেও চুপ থাকছেন বলে এ কাজের জন্য দিন দিন ঘুসের পরিমাণ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিপ্রত্যাশী ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা অর্জনে নিবন্ধনের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হয়। মৌখিক পরীক্ষার সময় আমাদের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপরও পুলিশ ও এনএসআই ভেরিফিকেশন করা হচ্ছে।
অথচ যোগদানের পর এমপিওভুক্তির জন্য আবারও তিন ধাপে যাচাইয়ের নামে হয়রানি ও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। সে কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষকতায় এসেও এসব ঝামেলার কারণে মুখ ফিরিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
এই শিক্ষক বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপজেলা, জেলা শিক্ষা অফিসসহ আঞ্চলিক অফিসে টাকা দিলে কাজ হয়, নতুবা যাচাইয়ের নামে ফাইল দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়। এ পদ্ধতি বাতিল করে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি কার্যক্রম সরাসরি মাউশির আওতায় আনার দাবি জানান।
অভিযোগ স্বীকার করে মাউশি’র পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি ক্ষেত্রে ভোগান্তি ও ঘুস লেনদেনের বিষয়টি আমরা মুখে মুখে শুনলেও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সে কারণে এ বিষয়ে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। শিক্ষকদের ভোগান্তি কমাতে বিকল্প ব্যবস্থা কী করা যায় সেটি নিয়ে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, আগে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কাজ সরাসরি মাউশি থেকে করা হলেও গত চার বছর আগে সেটি বিকেন্দ্রীকরণ হিসেবে জেলা পর্যায়ে দেওয়া হয়। মাউশির ওপর চাপ কমাতে মাঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে মাউশিতে সুপারিশ পাঠালে তাদের এমপিওভুক্তি করতে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। অথচ বিকেন্দ্রীকরণের পর এমপিওভুক্তির কাজে ধাপে ধাপে অনিয়ম-দুর্নীতি বেড়ে গেছে। টাকা ছাড়া কোনো ধাপে ফাইল উপরে পাঠানো হয় না। এটি এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সেটি বন্ধে বিকেন্দ্রীকরণ বাতিল করে আবারো কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশি’র মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ  বলেন, শিক্ষকদের হয়রানি ও অর্থ লেনদেনের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এটি কীভাবে বন্ধ করা যায় সেটি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। বর্তমান পদ্ধতি পরিবর্তন করে এমপিওভুক্তীকরণের কাজ কেন্দ্রীয়ভাবে মাউশি থেকে করা যায় কি না সেটি নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।
মহাপরিচালক বলেন, যেহেতু এনটিআরসিএ’র নিবন্ধনের জন্য মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের একাডেমিকসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সেখানে আরও জনবল বাড়িয়ে মৌখিক পরীক্ষার সময় চূড়ান্তভাবে যাচাইয়ের কাজ করা হতে পারে। এরপর সে যখন নিয়োগ পাবে এমপিওভুক্তির জন্য মাউশিতে একটি আবেদন করতে বলা হবে। তার ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ইতিবাচক মত প্রকাশ করেছেন। তাই এনটিআরসিএ’র চতুর্থ ধাপের নিয়োগ থেকে বিকেন্দ্রীকরণ বাতিল করে মাউশির মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে করা যায় কি না তা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x