ঢাকারবিবার , ১৯ জুন ২০২২
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাপকহারে বেড়েছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি : এক সপ্তাহেই মৃত্যূ ৭ জনের

একুশে বার্তা ডেস্ক
জুন ১৯, ২০২২ ৭:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিবেদক: কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপকহারে বেড়েছে গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে হতাহতের ঘটনা। ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় পিকআপের ধাক্কায় একই পরিবারের ৬ সহোদর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। নিহতরা পিতার মৃত্যুর দশম দিন ধর্মীয় রীতিনীতি পালন শেষে ফেরার পথে উপজেলার মালুমঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

কেবল চলতি মাসের শেষ পনের দিনে ঘটেছে এমন আরও ১১টি দুর্ঘটনা। এতে ৭ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি গুরুতর আহত হয়েছেন ১৭ ব্যক্তি।
বিগত কয়েক দিনের সংবাদ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত ১৭জুন রাত ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সালওয়া রেস্টুরেন্টের সামনে চট্টগ্রামমুখি মোটরসাইকেল আরোহী মারুফুল ইসলাম(২৪)কে যাত্রীবাহি হানিফ পরিবাহণের একটি বাস চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলেই মারা যায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ(সিএমপি) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত মারুফ।
এর দুদিন আগে ১৫জুন  দিবাগত রাত ২টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের চিরিংগা কাঁচা রাস্তার মাথাস্থ বক্স রোডে মালবাহি ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মো.ফরহাদ (২৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়।
গত ১৫ জুন পুটিবিলায় অভ্যন্তরীণ সড়কে বেপরোয়া ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিক্সা আরোহী শিশুসহ ২ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪ জন।
গত ১৬ জুন মহাসড়কের চুনতিতে দুই যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
১৭ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে দুই ব্যাটারি চালিত রিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।
গত ১৩জুন সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হারবাং বুড়ির দোকান এলাকায় চট্টগ্রামুখি একটি পিকআপ বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী লেগুনার উপর তুলে দেয়। এসময় লেগুনা সড়কের পাশে খাদে উল্টে গিয়ে চালক ঘটনাস্থলে লেগুনার চালক মো.নোমান (২০) নিহত হয়।
গত ১২ জুন আমিরাবাদ ইউনিয়নের সিমেন্ট মিক্সার মেশিন বহনকারী গাড়ির সঙ্গে মিনিট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন গুরুতর আহত হন। গত ১৩ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেইটের দক্ষিণ পাশে দুই যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সর্বশেষ গত ১৮ জুন ভোররাতে বটতলী স্টেশনে ট্রাক ও নোয়াহ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিচ্ছন্ন কর্মী গুরতর আহত হয়েছেন।গত ১৩জুন সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হারবাং বুড়ির দোকান এলাকায় চট্টগ্রামুখি একটি পিকআপ বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী লেগুনার উপর তুলে দেয়। এসময় লেগুনা সড়কের পাশে খাদে উল্টে গিয়ে চালক ঘটনাস্থলে লেগুনার চালক মো.নোমান (২০) নিহত হয়।
গত ১২ জুন আমিরাবাদ ইউনিয়নের সিমেন্ট মিক্সার মেশিন বহনকারী গাড়ির সঙ্গে মিনিট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন গুরুতর আহত হন। গত ১৩ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেইটের দক্ষিণ পাশে দুই যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সর্বশেষ গত ১৮ জুন ভোররাতে বটতলী স্টেশনে ট্রাক ও নোয়াহ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিচ্ছন্ন কর্মী গুরতর আহত হয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এরমধ্যে একইমুখী-বিপরীতমুখী গাড়ির সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পড়া, পথচারীকে চাপা দেয়াসহ নানাভাবে ঘটছে এসব দুর্ঘটনা। এতে প্রাণহানির পাশাপাশি বহু মানুষ আহত হচ্ছেন। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ পরিলক্ষিত হয় তাহল- চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, হেল্পারকে দিয়ে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক, সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা, ওভারটেকিং, দীর্ঘক্ষণ বিরতিহীন গাড়ি চালানো, জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা, অপ্রশস্ত সড়ক, বিপজ্জনক বাঁক, মহাসড়কে ধীর গতির ছোট যানবাহন চলাচল, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে গাড়ি চলাচল, সড়কের দু’পাশে অনেকগুলো হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রতিবছর সংস্কারের ফলে মহাসড়কের দু’পাশে অসমান অংশের দূরত্ব বৃদ্ধিও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।
পরিবহণ শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার প্রধান কারণ চালকের বেপরোয়া গতি। দুর্ঘটনার আরও একটি অন্যতম কারণ হলো, ঘুমের ঘোরে গাড়ি চালানো। বিশ্রাম ব্যতীত গাড়ি চালানোর ফলে তাদের চোখে অনেক সময় ঘুম চলে আসে। ফলে ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা।চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ হলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এ ছাড়া নছিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলে এ সড়কে। অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে চলে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক। ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
চকরিয়া-বদরখালী সড়ক, পেকুয়া-চকরিয়া সড়ক, ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী সড়ক, গোমাতলী-ইসলামপুর সড়ক, কালিরছড়া থেকে নাপিতখালী পর্যন্ত মহাসড়কের অবস্থা খুবই বিপজ্জনক। আবার বেশ ক’জন পথচারীদের মতে, মহাসড়কে শুধু লবণ পানির কারণে সড়ক বিপজ্জনক হওয়ায় দুর্ঘটনা বেড়েছে। এসবের পরও খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহন দমানো যাচ্ছে না। পিচ্ছিল হওয়া ছাড়াও লবণ পানি পড়ে মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে হারবাং, বরইতলী, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা ও খুটাখালী ইউনিয়নের বিশাল এলাকা মহাসড়কের মধ্যে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের ২০টি স্পটে সড়ক দখল করে দৈনিক বাজার বসার কারণে গাড়ি চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময় দূরপাল্লার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ছোট গাড়িগুলো প্রধান সড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ করলেও এসবের তোয়াক্কা করছে না গাড়ি চালকরা। এছাড়াও পর্যটন শহর কক্সবাজারে গাড়ি আসাও ব্যাপকহারে বাড়ছে। এসব কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রকিবুর রাজা জানান, বৃষ্টিপাত, অপ্রশস্ত মহাসড়ক, বিপজ্জনক বাঁক, ওভারটেকিং, অপ্রশিক্ষিত চালক, বেপরোয়া গতি ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা চালকদের এই সড়ক সম্পর্কে ধারণা না থাকা ইত্যাদি কারণে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে।এছাড়া খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহন কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। এ কারণে এলাকার লবণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। খোলা লবণ পরিবহন বন্ধে সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় লবণ পরিবহনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ইনচার্জ শাফায়েত হোসেন জানান, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু স্থানে আঁকা-বাঁকা সড়ক, সরুপথ, অদক্ষ চালক ও ছোট সড়কগুলোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তিনি আরও জানান,হাইওয়ে থানার উদ্যোগে প্রতি মাসে চালক ও সহকারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন চলমান আছে। এছাড়া দুর্ঘটনারোধে বিভিন্ন সময় চালকদের মাঝে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। মহাসড়কে ধীরগতির নিষিদ্ধ গাড়ির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, পর্যায়ক্রমে মহাসড়কের মূল অংশের সাথে অসমান অংশ মাটি দ্বারা ভরাট করা হবে। এছাড়া মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে।


বিশেষ প্রতিবেদক
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপকহারে বেড়েছে গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে হতাহতের ঘটনা। ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় পিকআপের ধাক্কায় একই পরিবারের ৬ সহোদর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। নিহতরা পিতার মৃত্যুর দশম দিন ধর্মীয় রীতিনীতি পালন শেষে ফেরার পথে উপজেলার মালুমঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

কেবল চলতি মাসের শেষ পনের দিনে ঘটেছে এমন আরও ১১টি দুর্ঘটনা। এতে ৭ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি গুরুতর আহত হয়েছেন ১৭ ব্যক্তি।
বিগত কয়েক দিনের সংবাদ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত ১৭জুন রাত ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সালওয়া রেস্টুরেন্টের সামনে চট্টগ্রামমুখি মোটরসাইকেল আরোহী মারুফুল ইসলাম(২৪)কে যাত্রীবাহি হানিফ পরিবাহণের একটি বাস চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলেই মারা যায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ(সিএমপি) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত মারুফ।
এর দুদিন আগে ১৫জুন  দিবাগত রাত ২টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের চিরিংগা কাঁচা রাস্তার মাথাস্থ বক্স রোডে মালবাহি ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মো.ফরহাদ (২৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়।
গত ১৫ জুন পুটিবিলায় অভ্যন্তরীণ সড়কে বেপরোয়া ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিক্সা আরোহী শিশুসহ ২ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪ জন।

গত ১৬ জুন মহাসড়কের চুনতিতে দুই যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
১৭ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে দুই ব্যাটারি চালিত রিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।
গত ১৩জুন সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হারবাং বুড়ির দোকান এলাকায় চট্টগ্রামুখি একটি পিকআপ বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী লেগুনার উপর তুলে দেয়। এসময় লেগুনা সড়কের পাশে খাদে উল্টে গিয়ে চালক ঘটনাস্থলে লেগুনার চালক মো.নোমান (২০) নিহত হয়।
গত ১২ জুন আমিরাবাদ ইউনিয়নের সিমেন্ট মিক্সার মেশিন বহনকারী গাড়ির সঙ্গে মিনিট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন গুরুতর আহত হন। গত ১৩ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেইটের দক্ষিণ পাশে দুই যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

সর্বশেষ গত ১৮ জুন ভোররাতে বটতলী স্টেশনে ট্রাক ও নোয়াহ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিচ্ছন্ন কর্মী গুরতর আহত হয়েছেন।গত ১৩জুন সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হারবাং বুড়ির দোকান এলাকায় চট্টগ্রামুখি একটি পিকআপ বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী লেগুনার উপর তুলে দেয়। এসময় লেগুনা সড়কের পাশে খাদে উল্টে গিয়ে চালক ঘটনাস্থলে লেগুনার চালক মো.নোমান (২০) নিহত হয়।
গত ১২ জুন আমিরাবাদ ইউনিয়নের সিমেন্ট মিক্সার মেশিন বহনকারী গাড়ির সঙ্গে মিনিট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন গুরুতর আহত হন। গত ১৩ জুন সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেইটের দক্ষিণ পাশে দুই যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সর্বশেষ গত ১৮ জুন ভোররাতে বটতলী স্টেশনে ট্রাক ও নোয়াহ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিচ্ছন্ন কর্মী গুরতর আহত হয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এরমধ্যে একইমুখী-বিপরীতমুখী গাড়ির সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পড়া, পথচারীকে চাপা দেয়াসহ নানাভাবে ঘটছে এসব দুর্ঘটনা।

এতে প্রাণহানির পাশাপাশি বহু মানুষ আহত হচ্ছেন। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ পরিলক্ষিত হয় তাহল- চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, হেল্পারকে দিয়ে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক, সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা, ওভারটেকিং, দীর্ঘক্ষণ বিরতিহীন গাড়ি চালানো, জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা, অপ্রশস্ত সড়ক, বিপজ্জনক বাঁক, মহাসড়কে ধীর গতির ছোট যানবাহন চলাচল, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে গাড়ি চলাচল, সড়কের দু’পাশে অনেকগুলো হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রতিবছর সংস্কারের ফলে মহাসড়কের দু’পাশে অসমান অংশের দূরত্ব বৃদ্ধিও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।

পরিবহণ শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার প্রধান কারণ চালকের বেপরোয়া গতি। দুর্ঘটনার আরও একটি অন্যতম কারণ হলো, ঘুমের ঘোরে গাড়ি চালানো। বিশ্রাম ব্যতীত গাড়ি চালানোর ফলে তাদের চোখে অনেক সময় ঘুম চলে আসে। ফলে ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা।চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ হলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এ ছাড়া নছিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলে এ সড়কে। অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে চলে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক। ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

চকরিয়া-বদরখালী সড়ক, পেকুয়া-চকরিয়া সড়ক, ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী সড়ক, গোমাতলী-ইসলামপুর সড়ক, কালিরছড়া থেকে নাপিতখালী পর্যন্ত মহাসড়কের অবস্থা খুবই বিপজ্জনক। আবার বেশ ক’জন পথচারীদের মতে, মহাসড়কে শুধু লবণ পানির কারণে সড়ক বিপজ্জনক হওয়ায় দুর্ঘটনা বেড়েছে। এসবের পরও খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহন দমানো যাচ্ছে না। পিচ্ছিল হওয়া ছাড়াও লবণ পানি পড়ে মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে হারবাং, বরইতলী, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা ও খুটাখালী ইউনিয়নের বিশাল এলাকা মহাসড়কের মধ্যে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের ২০টি স্পটে সড়ক দখল করে দৈনিক বাজার বসার কারণে গাড়ি চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময় দূরপাল্লার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ছোট গাড়িগুলো প্রধান সড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ করলেও এসবের তোয়াক্কা করছে না গাড়ি চালকরা। এছাড়াও পর্যটন শহর কক্সবাজারে গাড়ি আসাও ব্যাপকহারে বাড়ছে। এসব কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রকিবুর রাজা জানান, বৃষ্টিপাত, অপ্রশস্ত মহাসড়ক, বিপজ্জনক বাঁক, ওভারটেকিং, অপ্রশিক্ষিত চালক, বেপরোয়া গতি ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা চালকদের এই সড়ক সম্পর্কে ধারণা না থাকা ইত্যাদি কারণে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে।এছাড়া খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহন কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। এ কারণে এলাকার লবণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। খোলা লবণ পরিবহন বন্ধে সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় লবণ পরিবহনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ইনচার্জ শাফায়েত হোসেন জানান, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু স্থানে আঁকা-বাঁকা সড়ক, সরুপথ, অদক্ষ চালক ও ছোট সড়কগুলোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তিনি আরও জানান,হাইওয়ে থানার উদ্যোগে প্রতি মাসে চালক ও সহকারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন চলমান আছে। এছাড়া দুর্ঘটনারোধে বিভিন্ন সময় চালকদের মাঝে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। মহাসড়কে ধীরগতির নিষিদ্ধ গাড়ির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, পর্যায়ক্রমে মহাসড়কের মূল অংশের সাথে অসমান অংশ মাটি দ্বারা ভরাট করা হবে। এছাড়া মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে।

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x