ঢাকারবিবার , ৩০ মে ২০২১
  1. অপরাধ
  2. অর্থনৈতিক
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্টগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. জেলা/উপজেলা
  12. জোকস
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. ধর্ম

ছারপোকার ড্রাইভার রায়হানের হঠাৎ আলিশান জীবন যাপন!

একুশে বার্তা
মে ৩০, ২০২১ ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
যে ব্যক্তির এক বছরে আগে ছারপোকা গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। তিনিই এখন দামী মোটরসাইকেল নিয়ে আলিশান ভাবে চলা-ফেরা করছেন। যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন এই যুবক। বলছিলাম কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোমারিয়া ঘোনা এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রায়হানের কথা।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, এই যুবক এক বছর আগে ছারপোকা গাড়ি চালাতেন। তার দুই বোন চাকরি করতেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ওই সময় কোন ভাবে পরিচয় হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি শওকত ইসলামের সাথে। রায়হানের বোনের সাথে পরিচয় হওয়ার সুবাধে ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসেন ঈদগাাঁও ভোমারিয়া ঘোনায়। শুধু শওকত নয় এসেছেন সুন্দরী স্ত্রী মরজিনাও। দীর্ঘ বছর ভোমারিয়ায় ঘোনায় রায়হানের বাড়ির পেছনে একটি বাড়িতে থাকার জন্য ব্যবস্থা করেন রায়হান। ইমাম হোসেন নামের এক প্রফেসরের বাড়িতে থাকলেও খাবার-দাবার খেতেন রায়হানের বাড়িতে।
সূত্রের দাবী, দীর্ঘ বছর ভোমারিয়া ঘোনা এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে আসা শওকত ইসলাম শ্রমিক ভেসে চলছিলেন। একদিন একটি ঘটনা সম্পর্কে বিচার যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিমের কাছে। ওই সময় তিনি তার এলাকায় রোহিঙ্গা বসবাসের কথা জানতে পেরে তাকে ক্যাম্পে চলে যেতে বাধ্য করেন। ওই সময় সেখান থেকে এসে কক্সবাজার শহরে আলিশান ভাবে জীবন যাপন করেন শওকত ইসলাম এবং তার স্ত্রী মর্জিনা। মোহাম্মদ রায়হান সকল সমস্যা সমাধান করেও দিতেন কক্সবাজার শহরে। সেখান থেকে চলে যায় চট্টগ্রামে। এরই চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার সি ব্লকের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার ৩০০ ইয়াবা এবং নগদ এক কোটি ১৭ লাখ টাকাসহ শওকত এবং তার স্ত্রীকে গেফতার করেন র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ৭ সদস্যরা। গেলো বছরের ৮ নভেম্বর তারা শওকত ইসলাম এবং তার স্ত্রী মর্জিনা ধরা পড়লেও তাদের প্রধান সহযোগী ভোমারিয়া ঘোনার মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ ব্যবসা।
ভোমারিয়ার ঘোনার নির্ভর যোগ্য সূত্র দাবী করছে, সম্প্রতি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মোটর সাইকেল কিনে চলা-ফেরা করছেন রাজার ভেসে। তার মোটর সাইকেলের হর্ণের শব্দে যেন অতিষ্ট এলাকাবাসী। এলাকায় তার নাম দিয়েছে ‘রাজ ভাই’। বাবার অল্প বেতনে চাকরি করা সংসারে ভীশন অভাবে থাকা সংসারে যেন এখন রাজার হাল চলছে।
এলাকাবাসী জানায়, রায়হান এক সময় ছারপোকা গাড়ি চালালেও এখন কিছুই করেন না। কয়েক দিন পর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং সিলেটে যাওয়া আসা তার। তাও আবার স্থলপথে নয় বিমানে করেই তার যাত্রা। এছাড়াও কক্সবাজার শহরের আলির জাহাল এলাকায় গড়েছেন কিশোর গ্যাং। তাদের নিয়ে দূরে কোথাও মাঝে মধ্যে যাওয়া হয় মোটারসাইকেল রাইডে।
অভিযোগ রয়েছে, নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়া সংসারে রায়হান এখন ৭ থেকে ৮টি টমটমের মালিক। এছাড়াও নামে-বেনামে কিনেছেন অনেক জমি। দৃশ্যমান কিছুই না করে হুট করে হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ টাকার মালিক।
সূত্রের দাবী, ইতিমধ্যে আলিশান ভাবে বাড়ি তৈরি করতে সমস্ত পরিকল্পা করা হলে এলাকায় এসব বিষয় জানাযানি হলে এবং তার বাবা অসুস্থ হওয়ায় বাড়ি নির্মান প্রক্রিযা বন্ধ করে রাখে রায়হান।
এদিকে দীর্ঘ বছর কোন আত্বীয় না হয়েও রোহিঙ্গা দম্পত্তিকে কেন স্থান দিলেন রায়হান এবং তাদের সাথে সবচেয়ে গভীর সম্পর্কে বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রায়হান বলেন, আমার সাথে শুধু সম্পর্ক ছিলো। তাদের সাথে কোন অবৈধ ব্যবসা করিনি।
রায়হান দাবী করেন, ছোট বয়স থেকে তিনি একজন ইসলামিক শিল্পী। সেখান থেকেই কিছু টাকা কামিয়েছেন।
এদিকে মাত্র তিন মাস আগে র‌্যাবে হাতে গ্রেফতার হওয়া রোহিঙ্গা দম্পত্তিকে কারাগার থেকে ছাড়াতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাটে নেমেছেন রায়হান। এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয় অনেকেই।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে ভোমারিয়া ঘোনার ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিমের কাছে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘সামান্য ছারপোকা চালিয়ে কিভাবে লাখ লাখ টাকার মালিক হলো এই প্রশ্ন এখন সবার। তবে চট্টগ্রামে ৫ হাজার ৩০০ ইয়াবা এবং এক কোটি ১৭ লাখ টাকাসহ আটক হওয়া রোহিঙ্গা দম্পত্তির সাথে সবচেয়ে তার সম্পর্ক আছে বলে জানি’।
ইউপি সদস্য হাকিম বলেন, ‘আমি নিজেই ওই রোহিঙ্গা দম্পত্তিকে চলে যাওয়ার জন্য বাধ্য করি’।
দুই বারের এই ইউপি সদস্য হয়েও এখনো নিজের ভাইয়ের টাকাতেই তার চলতে হয়। হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে গলাগাছ হওয়া রায়হানের বেলায় অবৈধ কিছু না করলে এতো টাকার মালিক কিংবা সম্পত্তি হতো না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে এসব বিষয় নিয়ে নজরে আনা হলে নবগঠিত ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, ঈদগাঁও এলাকায় কেউ অবৈধ ভাবে কোন ধরনের ব্যবসা করতে পারবে না। অভিযোগ পেলেই তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রিয় পাঠক, আপনিও একুশে বার্তা অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন ekusheybartaonline@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

x