খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

নতুন নীতিমালায় স্বচ্ছতার দাবি প্রশাসনের, শিক্ষকদের একাংশের আপত্তি

রাবিতে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ

ত্বাসীন সিদ্দিকা রূপা, রাবি
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১১:০৪ অপরাহ্ণ
রাবিতে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে লিখিত পরীক্ষা। দীর্ঘদিন ধরে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ চললেও এবার থেকে নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, স্বচ্ছতা ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত। তবে এ পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজে দেখা দিয়েছে মতপার্থক্য।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দীন খান।

তিনি লেখেন, “রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। এখন থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মেধাক্রম অনুযায়ী তিন গুণ প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য আহ্বান জানানো হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সম্মিলিত পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।”

তিনি আরও জানান, বোর্ডের সদস্যরা নিজেরা উপস্থিত থেকে হাতে লিখে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন এবং বোর্ড সভাপতির কাছে জমা দেন। উপাচার্য প্রশ্নগুলো মডারেশন করে চার থেকে পাঁচটি প্রশ্ন চূড়ান্ত করেন। পরীক্ষার সময় ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। শেষে একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করে দিলে, সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকারীরাই মূল্যায়ন করেন। পরে নম্বর যোগ করে ডিকোডিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচিতদের রোল নম্বর প্রকাশ করা হয়।

প্রশাসন এই ব্যবস্থাকে মেধা যাচাইয়ের একটি স্বচ্ছ ও আধুনিক পদ্ধতি হিসেবে দাবি করলেও একাধিক শিক্ষক এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন

পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুল হক লিখেছেন, “আমি এই লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে একমত নই। এটি বিভাগের শিক্ষকদের ওপর অনাস্থা প্রকাশের শামিল। ভাইভা বা প্রেজেন্টেশনই যথেষ্ট ছিল। বিভাগীয় শিক্ষকদের উপস্থিতিতেই একটি প্রার্থীকে মূল্যায়ন করা যায়।”

গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশিদ আরও একধাপ এগিয়ে লিখেছেন, “বিশ্বের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ হয় না। ৪৫ মিনিটের একটি সাধারণ পরীক্ষা কীভাবে কারও একাডেমিক মেধার চূড়ান্ত প্রমাণ হতে পারে? বরং একাডেমিক রেজাল্টে ৮০, লিখিত ১০ ও ভাইভাতে ১০ নম্বর রাখলে সেটাই হতো যৌক্তিক পদ্ধতি।”

তিনি আরো লিখেছেন, “আমি হলফ করে বলতে পারি, নামকরা অনেক শিক্ষককেও যদি এই পরীক্ষায় বসানো হয়, তারা পাশ করতে পারবেন না। কাজেই এই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে হয়তো কোনো ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ বাস্তবায়িত হচ্ছে।”

অন্যদিকে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জামিরুল ইসলাম প্রক্রিয়াটিকে “অতীতের তুলনায় উন্নত” বলে মত দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “আমি লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি রেজাল্ট, প্রবন্ধ, ভাইভা ও ডেমো ক্লাস মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করার পক্ষপাতি। এতে ভালো প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ বাড়ে, যদিও এটি সময়সাপেক্ষ।”

তিনি আরো বলেন, “একেবারে নিখুঁত পদ্ধতি সম্ভব না হলেও বর্তমানে যা করা হচ্ছে, তা অতীতের চেয়ে ভালো। প্রশাসনের উচিত শিক্ষকদের মতামত বিবেচনায় রেখে প্রক্রিয়াটি পরিপূর্ণ করা।”

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে নতুন নিয়মে প্রথম নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে সমাজকর্ম বিভাগে। আগামীতে অন্যান্য বিভাগেও এ পদ্ধতিতে নিয়োগ চলবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অধিকার আদায়ের ডাক — এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ১ম–১২তম নিবন্ধনধারীরা

মোঃ শফিকুল ইসলাম (মাগুরা সদর)
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:১২ অপরাহ্ণ
অধিকার আদায়ের ডাক — এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ১ম–১২তম নিবন্ধনধারীরা

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন, নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন করার দায়িত্বে গঠিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কিন্তু বৈধ সনদপ্রাপ্ত (১ম থেকে ১২তম) নিবন্ধনধারীরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বঞ্চনার শিকার।

এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আসছে ৯ নভেম্বর শাহবাগে আবারও কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন নিবন্ধনধারীরা।

তাদের অভিযোগ, বারবার মনগড়া নিয়ম প্রণয়ন করে নিবন্ধনধারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এনটিআরসিএ এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আয় করছে কোটি কোটি টাকা। একাধিক ধাপে আবেদন করতে হয় প্রার্থীদের, প্রতিটি ধাপেই দিতে হয় আলাদা ফি—ফলে হাজার হাজার টাকা খরচ হয় একজন প্রার্থীর।

২০১৪ সালে এনটিআরসিএ থেকে বৈধ সনদপ্রাপ্ত মো. মামুন ইসলাম জানান,

> “তিন বছর ধরে অপেক্ষা করছি। টেবিল টেবিল ঘুরেছি। এমনকি এক সহকর্মী মিতা নিজের স্বর্ণের চেন বিক্রি করে আবেদন করেছে। তারপরও কোনো সুরাহা হয়নি।”

নির্বাহী কমিটির সদস্য আমির আসহাব জানান,

তাদের দাবি, গণবিজ্ঞপ্তির আবেদনে এনটিআরসিএ প্রায় ২০৩ কোটি টাকা আয় করেছে—কিন্তু তার বিনিময়ে প্রার্থীরা পাচ্ছেন না ন্যায্য নিয়োগ। নিবন্ধনধারীদের ভাষায়, “এনটিআরসিএর নিয়মগুলোই যেন এক একটি ফাঁদ।”

বছরের পর বছর ধরে চলমান এই বঞ্চনা ও বৈষম্যের প্রতিবাদে ১–১২তম নিবন্ধনধারীরা একাধিকবার মানববন্ধন, অনশন ও আন্দোলন করেছেন। ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর প্রেসক্লাবে মানববন্ধনের মাধ্যমে শুরু হয় তাদের আন্দোলন। এরপর প্রায় ২০০ দিন অনশন ও রাতযাপন কর্মসূচি পালন করেছেন শাহবাগ ও শহীদ মিনারে।

তাদের আন্দোলনে জলকামান ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে, তবুও তারা পিছু হটেননি। বারবার আশ্বাস পেলেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নির্বাহী কমিটির সদস্য জিএম ইয়াছিন নিবন্ধনধারীদের পক্ষে দাবি উপস্থাপন করে বলেন
“আমরা বৈধ সনদপ্রাপ্ত শিক্ষক। আমাদের নিয়োগ না দেওয়া সরাসরি বৈষম্য ও অবিচার। আমরা চাই শিক্ষা ক্ষেত্রের বৈষম্য দূরীকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ।”আগামী ৯ নভেম্বরের মহাসমাবেশে শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, এবার তাদের আন্দোলন শেষ লড়াইয়ের ঘোষণা হয়ে আসবে।

বেঁচে থাকার কঠিন যুদ্ধে রিফাত, চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিলেন কায়সার কামাল

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ণ
বেঁচে থাকার কঠিন যুদ্ধে রিফাত, চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিলেন কায়সার কামাল

নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত হরিণাকুড়ি গ্রামের রিফাত জন্মের পর থেকেই থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। রিফাতের বাবা আলম মিয়া একজন সাধারণ শ্রমজীবী। তার সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। তাই রিফাতের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছিলো না। দিন দিন রিফাতের শারিরীক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছিলো।

এবার রিফাতের জন্য মানবতার হাত বাড়ালেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি ১৪ বছর বয়সী রিফাতের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। সোমবার (৫ নভেম্বর) এই কিশোরকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রিফাতের বাবা আলম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে রিফাতকে প্রতি মাসে রক্ত দিতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক পরীক্ষায় জানা যায়, তার লিভারে একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, যা সম্পন্ন হলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রিফাতের পারিবারিক সূত্র জানায়, বেঁচে থাকার যুদ্ধটা যখন রিফাতের জন্য কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছিলো এবং তার জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিলো ঠিক তখনই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

বর্তমানে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ডা. শাহীনের তত্ত্বাবধানে রিফাতের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানান, থ্যালাসেমিয়া রোগের চলমান ট্রিটমেন্টের মধ্যে এখন জরুরি ভিত্তিতে তার লিভারের অপারেশন করতে হবে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, জটিল রোগ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রিফাত যেন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, তার সমস্ত চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আসুন সবাই দোয়া করি রিফাতের সফল অপারেশনের জন্য। মানবতার সেবায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

এই মানবিক উদ্যোগ নেয়ায় স্থানীয় জনসাধারণ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

কুড়িগ্রামে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১:৩৭ অপরাহ্ণ
কুড়িগ্রামে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও সমাবেশ

কুড়িগ্রামে সাংবাদিকদের ২১দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার (১লা নভেম্বর) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মোড়ে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেন কুড়িগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেজিইউজে)।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের নূন্যতম বেতন ৩৫ (পয়ত্রিশ) হাজার টাকা, সাগর-রুনী হত্যাসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের চাকুরিতে পুনর্বহালসহ ২১ দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।

তাঁরা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর – রুনী হত্যাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাংবাদিকদের উপর হামলা ও হত্যার বিচার করতে হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে কুড়িগ্রাম জেলার নয়টি উপজেলার সকল ইলেক্ট্রিনক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।