রাজশাহীতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (১ মে) উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রাজশাহী মহানগর শাখার উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহীর বিআরইএল অফিসে আয়োজিত এ সভায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এবং বিআরইএল সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ‘শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন অনিবার্য’ এই মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত সভায় শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা, সমস্যা এবং উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ১ মে শ্রমিক দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের সংগ্রাম, অধিকার এবং মর্যাদার প্রতীক। ১৮৮৬ সালের শিকাগো শহরের হে মার্কেট আন্দোলনের মাধ্যমে যে ন্যায্য শ্রমঘণ্টা ও ন্যায্য মজুরির দাবি বিশ্বমঞ্চে আলোড়ন তুলেছিল, তার চেতনা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। অথচ দুঃখজনকভাবে, আজও শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের বাস্তবায়ন অনেক ক্ষেত্রে অধরা থেকে গেছে। দেশে-বিদেশে নানা প্রলোভন ও শোষণের মুখে শ্রমিকেরা বারবার নিপীড়িত হচ্ছেন। বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনীতির মূলধারা শ্রমিককে পণ্য হিসেবে বিবেচনা করে, যেখানে শ্রমিকের মানবিক মর্যাদা প্রায়শই অবহেলিত হয়। মুনাফাকেন্দ্রিক এই ব্যবস্থায় শ্রমিকদের পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য দেয়া হয় না। নিম্ন মজুরি, অনিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকারে বাধা প্রদান এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো এখন নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, কৃষি, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে শ্রমিকরা দীর্ঘসময় কাজ করেও তাদের ন্যায্য অধিকার ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত শ্রমিকদের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের উদ্যোগ অনেক ক্ষেত্রেই চোখে পড়ে না। পরিবর্তনের পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব।
তারা বলেন, সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ। শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আপনারাই হতে পারেন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ
মিত্র। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রশিক্ষণ ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে একটি ন্যায়ভিত্তিক শ্রমব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের মূল লক্ষ্য। আসন্ন শ্রমিক দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক সমাবেশ, প্রচারাভিযান ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনার কথাও জানানো হয় সভায়।
সভা শেষে এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, “শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা শুধু একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত। আমরা ইসলামি শ্রমনীতির আলোকে এই অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, সহ সভাপতি সরকার নাহারুল ইসলামসহ সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা কর্মীবৃন্দরা।