খুঁজুন
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

মাদারীপুরে বালু ব্যবসা নিয়ে বিরোধ: প্রতিপক্ষের হামলায় তিন ভাই নিহত

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ২:৪৫ পূর্বাহ্ণ
মাদারীপুরে বালু ব্যবসা নিয়ে বিরোধ: প্রতিপক্ষের হামলায় তিন ভাই নিহত

মাদারীপুরে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যার পরে লাশ হাসপাতালে নেওয়ার সময়

মাদারীপুরে বালুর ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় তিন ভাই নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় আরও দুজন গুরুতর আহত হন।

নিহতরা হলেন আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০) এবং তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার। আতাউর ও সাইফুল সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা আজিবর সরদারের ছেলে। সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পলাশ একই এলাকার মুজাম সরদারের ছেলে।

হামলার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত দুজন হলেন তাজেল হাওলাদার (১৮) ও অলিল সরদার (৪০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি সদর উপজেলার খোয়াজপুর টেকেরহাট এলাকার মোল্লা বাড়ি ও সরদার বাড়ির মাঝামাঝি স্থানে বালু তোলা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে শনিবার সকালে মোল্লা বাড়ির লোকজন দেশীয় অস্ত্রসহ সরদার বাড়িতে হামলা চালায়। প্রতিপক্ষের হামলা থেকে রক্ষা পেতে সাইফুল ও তাঁর দুই ভাই বাড়ির সামনে একটি মসজিদে আশ্রয় নেন। পরে হামলাকারীরা মসজিদের ভেতরে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে জখম করে। তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে আরও দুজন হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা আতাউর ও সাইফুলের বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আতাউর ও সাইফুলের মরদেহ উদ্ধার করে এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এর আগে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে পলাশ মারা যান।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নাহিদা আক্তার জানান, হাসপাতালে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এছাড়া আহত তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল, যাঁদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের গভীর জখম ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত আতাউর সরদারের স্ত্রী মাহামুদা বেগম স্বামী ও দেবরের মরদেহ নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর কী দোষ ছিল? সে তো সবার উপকার করত! শাজাহান মোল্লা, হাসান সরদার, হোসেন সরদার মিলে আমার স্বামী ও দেবরকে হত্যা করেছে। আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

নিহতদের বড় ভাবি রোজিনা বেগম বলেন, ‘মোল্লা বাড়ির লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমার স্বামী ও দুই দেবরকে কুপিয়েছে। আমার দুই দেবর মারা গেছে, স্বামীর অবস্থাও সংকটাপন্ন। সব শেষ হয়ে গেল।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ভাস্কর সাহা দুপুর দেড়টায় বলেন, ‘সাইফুল এর আগে ওই এলাকায় দুই বালু ব্যবসায়ীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছিল। এ ঘটনার জেরে ওই ব্যবসায়ীরা ও এলাকার কিছু আধিপত্য বিস্তারকারী ব্যক্তি একত্রিত হয়ে সাইফুল ও তাঁর ভাইদের ওপর হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা মসজিদে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা সেখানে গিয়ে তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে, বাকি হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

পরে বিকেলে ভাস্কর সাহা আরও জানান, ‘ঢাকায় নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে নিহতের পরিবার থেকে এখনো পুলিশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। প্রথম দুজন যে আপন ভাই, সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।’

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ

মাসুদুর রহমান, দিনাজপুর প্রতিনিধি।
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ

আজ ২৬ মার্চ ২০২৫ খ্রি. সকাল ০৬:০৩ ঘটিকায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দিনাজপুর জেলার সন্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মারুফাত হুসাইন মহোদয়।

এ সময়ে জেলা পুলিশের চৌকস্ দল ৩১ বার তোপধ্বনি প্রদানের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ সূচনা করা হয় ।

১৯৭১ সালে বাঙালির উপর নেমে আসা পাহাড় সমান বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে “প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ” তৈরী করার দুঃসাহসী নজির স্থাপন করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের বাঙালি পুলিশ বাহিনী, যাকে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ হিসেবে ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করে। গর্বিত পুলিশ সদস্যের এই সাহসী পদক্ষেপটাকেই এই ভাস্কর্যের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জনাব আব্দুল্লাহ আল মাসুম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), জনাব সিফাত-ই-রাব্বান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), জনাব মোঃ মোসফেকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক এন্ড এস্টেট), দিনাজপুরসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

যশোর রোডের আর্তনাদ: একাত্তরের বিভীষিকার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
যশোর রোডের আর্তনাদ: একাত্তরের বিভীষিকার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

কবি লতিফুর রহমানের “যশোর রোডের আর্তনাদ” কবিতাটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের ভয়াবহতা ও মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের এক মর্মস্পর্শী চিত্র। কবিতাটি শুধু একটি পথের বর্ণনা নয়, বরং এটি সেই সময়ের বাস্তুচ্যুত, শরণার্থী মানুষের হাহাকার এবং বেঁচে থাকার আকুলতার এক জীবন্ত দলিল।

যশোর রোডের আর্তনাদ- কবি লতিফুর রহমান

যশোর রোডের ধুলোমাখা পথ, বেদনার এক নদী,
শত শত চোখ আকাশে খোঁজে, মুক্তির এক পরিধি।
বাঁশের ছাউনি, কাদা আর জল, জীবনের এক খেলা,
মরা ঈশ্বর আকাশে বসে, দেখে শুধু অবহেলা।

ঘরছাড়া মানুষ, চোখে নেই ঘুম, যুদ্ধের কালো ছায়া,
বোমারু বিমান মাথার ওপরে, কবে এই রাত ফুরায়?
একাত্তরের মুখগুলো সব, কত কথা যায় বলে,
আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা, কলকাতা আজও চলে।

সেপ্টেম্বরের পিচ্ছিল পথে, গরুর গাড়ির সারি,
লক্ষ মানুষ ভাতের খোঁজে, শোকে কাঁদে নারী।
রিফিউজি ঘরে শিশুর কান্না, ফোলা পেটের জ্বালা,
দিশেহারা মা কার কাছে যাবে, কে দেবে তার সাড়া?

যুদ্ধ আর মৃত্যু, তবু স্বপ্ন দেখে, ফেলে আসা সুখের মাঠ,
ভাতের কথা, ত্রাণের আশা, কে শুনে কার আর্তনাদ?
ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে, বেঁচে থাকা এক ধাঁধা,
আধপেটা শিশু মায়ের কোলে, কেমন এ জীবন বাঁধা?

ছোট ছোট পায়ে মৃত্যুর ছায়া, গুলির চিহ্ন বুকে,
ঘর ছাড়া মাটি মিছে মায়া, বাঁচার স্বপ্ন রুখে।
যশোর রোডের ধারে ধারে, এত কেন মরে লোক?
ছেঁড়া সংসার, এলোমেলো সব, বেদনার এই শোক।

শত শত চোখ আকাশে দেখে, মরে যাওয়া শিশুর দল,
যশোর রোডের যুদ্ধক্ষেত্রে, সব যেন এলোমেলো জল।
কাদামাখা মানুষ আকাশে খোঁজে, মরা ঈশ্বরের দেখা,
নালিশ জানাবে কাকে তারা, কে দেবে তাদের রেখা?

বিশ্ববাসীর কল্যাণ কামনায় দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিল

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোণা
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ণ
বিশ্ববাসীর কল্যাণ কামনায় দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিল

বিশ্ববাসীর কল্যাণ ও মঙ্গল কামনায় নেত্রকোণার দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সংগঠনের কার্যালয়ে এই আয়োজন করা হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষের মঙ্গল এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এই ইফতার আয়োজনে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিক অংশগ্রহণ করেন।

ইফতারের পূর্বে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বড় মসজিদ দারুল উলুম আবাসিক মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি আশরাফুর রহমান আনসারী।

এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুসঙ্গ দুর্গাপুর সমিতি ঢাকা’র সভাপতি এম. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কুল্লাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল,দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি মোহন মিয়া,সিনিয়র সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম,বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকবি সুজন হাজং, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক রুক্কু, যুগ্ম আহ্বায়ক বিকাশ সরকার, সদস্য সচিব আল ইমরান সম্রাট গণি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মির্জা নজরুল, জামায়াতে ইসলামী পৌর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান,উপজেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি কমরেড শামছুল আলম খান,সামাজসেবক হাজী মঞ্জুরুল হক,কবি লোকান্ত শাওন,কবি বিদ্যুৎ সরকার, দুর্গাপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান কমিটির সভাপতি উমর ফারুক হাওলাদার,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাতুল খান রুদ্র সহ অনেকে।

দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির এই ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সভাপতি দিলোয়ার হোসেন তালুকদার। তিনি বলেন,ইফতার মাহফিলে সকলের অংশগ্রহণ আমাদের আনন্দিত করেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে পাশে নিয়েই এগিয়ে যাবে আমাদের সকলের দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতি।

এই আয়োজন সফল করতে নিরলস কাজ করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ।