মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যু: সেনাবাহিনীর শোকপ্রকাশ

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যু: সেনাবাহিনীর শোকপ্রকাশ
ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া মারা গেছে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই শোক প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।”
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, শিশুটির চিকিৎসায় সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে গেলে আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। প্রথম দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল।
গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। সেখানে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০)-এর লালসার শিকার হয় সে। ঘটনার পর অচেতন অবস্থায় তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। খবর পেয়ে শিশুটির মা হাসপাতালে ছুটে আসেন।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ৭ মার্চ রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
গ্রেপ্তার ও আইনি ব্যবস্থা
এ ঘটনায় প্রধান আসামি হিটু শেখসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাও রয়েছেন।
রোববার (৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে তাদের রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত প্রধান আসামি হিটু শেখকে ৭ দিনের এবং সজীব হোসেন, রাতুল শেখ ও জাবেদা বেগমকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শিশুটির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সেনাবাহিনী তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। সেনাবাহিনী নিহত শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে।