দিনাজপুরে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দু-পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

দিনাজপুরে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দু-পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ছবি মো: মাসুদুর রহমান
দিনাজপুর সদর উপজেলার পুলহাট করিমুল্যাপুর (ড্রাইভারপাড়া) এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ ২০২৫ সকাল ১০:৩০ টার দিকে মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ শামসুল হকের (৬৭) বাড়িতে ভূমিদস্যু মোহাম্মদ আবুবকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে ১৪-১৫ জন সশস্ত্র ব্যক্তি হামলা চালায়। তারা ধারালো চাইনিজ কুড়াল, ছোরা, এসএস পাইপ ও লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ির আঙিনায় অনধিকার প্রবেশ করে এবং পরিবারের সদস্যদের ঘিরে ধরে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিবাদী আবুবকর সিদ্দিকের নির্দেশে হামলাকারীরা বাদীর বড় ছেলে মোঃ মোকছেদুর রহমান (৩৬)-কে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। এসময় মোঃ আঃ সামাদ (৫০) এসএস পাইপ দিয়ে মোকছেদুরের কপালে আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। বড় ভাইকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে মোঃ মিনারুল ইসলাম (৩৩)-এর ওপরও হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মোহাম্মদ রাহাত হোসেন (২২) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মিনারুলের মাথায় কোপ মারেন, যা গুরুতর রক্তক্ষরণ ঘটায়। আহত দুই ভাইয়ের কান্নাকাটি ও সাহায্যের আহ্বান শুনে তাদের তৃতীয় ভাই মোঃ মোকলেসার রহমান (৩৮), মা মোছাঃ মনছুরা বেগম (৬০), ভাতিজা মোঃ মেমিনুল ইসলাম (৪২) ও মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪১) এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদেরও আঘাত করে।
হামলাকারীদের একজন মোহাম্মদ রাহাত হোসেন (২২) ধারালো ছোরা দিয়ে মোকলেসার রহমানের বাম হাতে আঘাত করলে তার হাড় ফেটে যায় এবং মারাত্মক জখম হয়। মোঃ রাশেদ আলী (৪০) লোহার রড দিয়ে মনছুরা বেগমের পিঠে আঘাত করেন, যার ফলে সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। মোঃ হাসনাত আরিফ শুভ (২৬) লোহার রড দিয়ে শরিফুল ইসলামের মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।
তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পলায়নের সময় আবুবকর সিদ্দিক হুমকি দেন, এ ঘটনায় বেশি বাড়াবাড়ি করলে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুম করা হবে এবং তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।
পরবর্তীতে মোঃ শামসুল হক তার তিন ছেলে ও পরিবারের অন্যান্য আহত সদস্যদের দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক মোকছেদুর রহমানের কপালে ৫টি সেলাই, মিনারুল ইসলামের মাথায় ১৪টি সেলাই, মোকলেসার রহমানের হাতে ৪টি সেলাই দেন এবং বাকিদের চিকিৎসা করেন।
এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মোঃ শামসুল হক ও তার পরিবার পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।