খুঁজুন
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সময় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার

মোঃ মনিরুজ্জামান অনিক | ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৩ অপরাহ্ণ
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সময় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সময় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁওয়ে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোজাম্মেল হক মানিক নামে এক সহকারী শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

শনিবার (৮ মার্চ) জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ি মাদারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিক সেখানে নিয়মিত প্রাইভেট পড়াতেন। প্রতিদিনের মতো ওই শিক্ষার্থী প্রাইভেটে গেলে সুযোগ বুঝে শিক্ষক তাকে একটি কক্ষে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং ধর্ষণের পর পালিয়ে যায়।

পরিবার ও স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটিকে জেলা শহরের সেবা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। তবে, গোপনে চিকিৎসার চেষ্টা করলে সাংবাদিকরা খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায়। এতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে শিশুটিকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে ক্লিনিকের এক কর্মী সবুজসহ কয়েকজন ব্যক্তি তাদের বাধা দেয় এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে, অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর স্বজনরা শিশুটিকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। তারা অভিযোগ করেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে। তারা ভুক্তভোগী শিশুটিকে সরকারি হাসপাতালে না পাঠিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিল। তারা দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষকের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা হাসপাতালে যান এবং শিশুটির চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রকিবুল আলম জানান, ধর্ষণের অভিযোগে একটি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং মেডিকেল পরীক্ষা চলছে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে।

ভোগান্তিতে দুমকী বিটিসিএলের গ্রাহকেরা, বন্ধ ইন্টারনেট সেবা

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম | স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১:৫১ অপরাহ্ণ
ভোগান্তিতে দুমকী বিটিসিএলের গ্রাহকেরা, বন্ধ ইন্টারনেট সেবা

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের(বিটিসিএল) নিম্মমানের সেবা ও ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার গ্রাহকরা।

টেলিফোন লাইনে মোটামুটি সংযোগ পাওয়া গেলেও গত বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট সেবা এমন অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।

এতে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছেন অপরদিকে বিটিসিএলের স্বল্প মূল্যের ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রাহকেরা। এদিকে দুমকীতে বিটিসিএলের ২৫০ ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও তা কমতে কমতে এখন সংযোগ রয়েছে মাত্র ৩ টি।

এছাড়াও বিটিসিএলের কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার পেছনে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে কি-না তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আহমেদ পারভেজ জানান, এতোদিন টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পরে আজ আবার সংযোগ দিয়ে গেছে দুমকী বিটিসিএলের অফিস থেকে। ইন্টারনেট সেবা এখনো পাইনি।

উপজেলার ফোরসাইট মেডিকেল ইনিস্টিউটের পরিচালক সৈয়দ মজিবর রহমান টিটু অভিযোগ করে জানান, কিছু দিন আগে লাইনে একটা বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। বারবার তাগাদা দিয়ে টেলিফোন লাইন সংযোগ পেলেও ইন্টারনেট সংযোগ দিতেই পারেনি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেও তেমন কোন সারা পাচ্ছি না।

বিটিসিএলের জেলা কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক(বহিঃ) মোঃ আজিমুল্লাহ হক তামিম বলেন, কপারের তারের লাইনের চেয়ে ফাইবার অপটিক্যাবলের লাইনে ইন্টারনেট সেবা উন্নত মানের। দুমকী উপজেলাকে সর্বোচ্চ ডিমান্ডিং এরিয়া উল্লেখ করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখতভাবে চাহিদা দেয়া হয়েছে।

তবে প্যানেল সমস্যার জন্য এমনটি হচ্ছে বলে একুশে বার্তাকে জানিয়েছেন বিটিসিএল বরিশালের উপ-মহাব্যবস্থাপক (টেলিকম) মো. শামীম ফকির। প্যানেল চেয়ে বিটিসিএলের ঢাকা অফিসে দ্রুতই চাহিদা পাঠানো হবে এবং প্যানেলটি আসলে ইন্টারনেট সেবা পূর্বের মত পাওয়া যাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নে কোন ষড়যন্ত্র কাজ করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এটা সত্য নয়। আধুনিক টেকনোলজির সাথে আসলে ব্যাকডেটেড কপারের লাইনের সাথে যায় না। 

প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ধর্ম মন্ত্রী এম কেরামত আলী দুমকী টেলিফোন এক্সচেইঞ্জের নূতন ভবনের উদ্ভোদন করেন। গ্রাহক সেবা উন্নত এবং আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে সাতটি ভাগে বিভক্ত করে ২১ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘র‌্যাপিড রেসপন্স টিম’ নামে একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫ নম্বরে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এ টিম গ্রাহকদের যে কোনো প্রকার অভিযোগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ

মাসুদুর রহমান, দিনাজপুর প্রতিনিধি।
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ

আজ ২৬ মার্চ ২০২৫ খ্রি. সকাল ০৬:০৩ ঘটিকায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দিনাজপুর জেলার সন্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মারুফাত হুসাইন মহোদয়।

এ সময়ে জেলা পুলিশের চৌকস্ দল ৩১ বার তোপধ্বনি প্রদানের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ সূচনা করা হয় ।

১৯৭১ সালে বাঙালির উপর নেমে আসা পাহাড় সমান বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে “প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ” তৈরী করার দুঃসাহসী নজির স্থাপন করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের বাঙালি পুলিশ বাহিনী, যাকে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ হিসেবে ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করে। গর্বিত পুলিশ সদস্যের এই সাহসী পদক্ষেপটাকেই এই ভাস্কর্যের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জনাব আব্দুল্লাহ আল মাসুম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), জনাব সিফাত-ই-রাব্বান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), জনাব মোঃ মোসফেকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক এন্ড এস্টেট), দিনাজপুরসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

যশোর রোডের আর্তনাদ: একাত্তরের বিভীষিকার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
যশোর রোডের আর্তনাদ: একাত্তরের বিভীষিকার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

কবি লতিফুর রহমানের “যশোর রোডের আর্তনাদ” কবিতাটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের ভয়াবহতা ও মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের এক মর্মস্পর্শী চিত্র। কবিতাটি শুধু একটি পথের বর্ণনা নয়, বরং এটি সেই সময়ের বাস্তুচ্যুত, শরণার্থী মানুষের হাহাকার এবং বেঁচে থাকার আকুলতার এক জীবন্ত দলিল।

যশোর রোডের আর্তনাদ- কবি লতিফুর রহমান

যশোর রোডের ধুলোমাখা পথ, বেদনার এক নদী,
শত শত চোখ আকাশে খোঁজে, মুক্তির এক পরিধি।
বাঁশের ছাউনি, কাদা আর জল, জীবনের এক খেলা,
মরা ঈশ্বর আকাশে বসে, দেখে শুধু অবহেলা।

ঘরছাড়া মানুষ, চোখে নেই ঘুম, যুদ্ধের কালো ছায়া,
বোমারু বিমান মাথার ওপরে, কবে এই রাত ফুরায়?
একাত্তরের মুখগুলো সব, কত কথা যায় বলে,
আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা, কলকাতা আজও চলে।

সেপ্টেম্বরের পিচ্ছিল পথে, গরুর গাড়ির সারি,
লক্ষ মানুষ ভাতের খোঁজে, শোকে কাঁদে নারী।
রিফিউজি ঘরে শিশুর কান্না, ফোলা পেটের জ্বালা,
দিশেহারা মা কার কাছে যাবে, কে দেবে তার সাড়া?

যুদ্ধ আর মৃত্যু, তবু স্বপ্ন দেখে, ফেলে আসা সুখের মাঠ,
ভাতের কথা, ত্রাণের আশা, কে শুনে কার আর্তনাদ?
ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে, বেঁচে থাকা এক ধাঁধা,
আধপেটা শিশু মায়ের কোলে, কেমন এ জীবন বাঁধা?

ছোট ছোট পায়ে মৃত্যুর ছায়া, গুলির চিহ্ন বুকে,
ঘর ছাড়া মাটি মিছে মায়া, বাঁচার স্বপ্ন রুখে।
যশোর রোডের ধারে ধারে, এত কেন মরে লোক?
ছেঁড়া সংসার, এলোমেলো সব, বেদনার এই শোক।

শত শত চোখ আকাশে দেখে, মরে যাওয়া শিশুর দল,
যশোর রোডের যুদ্ধক্ষেত্রে, সব যেন এলোমেলো জল।
কাদামাখা মানুষ আকাশে খোঁজে, মরা ঈশ্বরের দেখা,
নালিশ জানাবে কাকে তারা, কে দেবে তাদের রেখা?