টেকনাফে বিকাশ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় মাদক-অপহরণ কারবার

টেকনাফে বিকাশ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় মাদক-অপহরণ কারবার!
জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে মাদক কারবার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। প্রশাসনের একের পর এক অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার ও মাদক পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করা হলেও থামছে না মাদকের দৌরাত্ম্য। অভিযোগ উঠেছে, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা—বিশেষ করে বিকাশ, নগদ ও রকেট ব্যবসায়ীরা মাদক কারবারীদের অবৈধ লেনদেনে সহায়তা করছে।
এক মাসে উদ্ধার ১২ লাখ ইয়াবা, গ্রেপ্তার ২৮
সূত্র জানায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিচালিত অভিযানে ১২ লাখ ৩৮ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে প্রশাসন। এ সময় প্রায় ২৮ জন মাদক পাচারকারী গ্রেপ্তার হয়। তবে মূল গডফাদাররা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক কারবার বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বিকাশ-নগদের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক কারবারীরা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক বিকাশ এজেন্ট হুন্ডি ব্যবসায়ও জড়িত বলে জানা গেছে। এমনকি অপহরণ ও মানব পাচারের মুক্তিপণের অর্থ লেনদেনও এসব মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক এহসান উদ্দিন বলেন,
“মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে হলে শুধু পাচারকারীদের আটক করলেই হবে না, মূল গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি বিকাশ-নগদের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন রোধে নজরদারি বাড়াতে হবে। তাহলেই অপরাধ কমবে।”
বিকাশের দোকানগুলো নজরদারির দাবি
টেকনাফ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নুরুল হুদা বলেন,
“মাদক কারবারীরা প্রায়ই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করে। বিকাশের দোকানগুলোর মাসিক লেনদেনের ওপর প্রশাসন নজরদারি করলে মাদক ও মানব পাচার অনেকটাই কমে যাবে।”
পুলিশ কী বলছে?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন,
“তদন্তে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করি। বিকাশের ব্যাপারে যদি কেউ অভিযোগ করে, আমরা তদন্ত করে দেখব।”
কী করা যেতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,
মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন
সন্দেহভাজন এজেন্টদের লেনদেন যাচাই করা উচিত
মাদকের গডফাদারদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে
প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতার মাধ্যমে টেকনাফে মাদক, অপহরণ ও মানব পাচারের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।