কালরাতের বজ্রকণ্ঠ: শহীদ জিয়ার স্মরণে ছাত্রনেতা মো. লতিফুর রহমানের অমর কবিতা

রাজশাহী: শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের অন্যতম বিপ্লবী ও মানবিক ছাত্রনেতা, কবি ও সাহিত্যিক মো. লতিফুর রহমান এক আবেগঘন কবিতা রচনা করেছেন। “কালরাতের বজ্রকণ্ঠ” শিরোনামের এই কবিতাটিতে তিনি জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক ভূমিকা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি গভীর মমত্ববোধের চিত্র তুলে ধরেছেন।
কবিতার শুরুতেই কবি লতিফুর রহমান ১৯৭১ সালের কালো রাতে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে জিয়ার ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার বজ্রকণ্ঠকে স্মরণ করেছেন। “আমি মেজর জিয়া বলছি” – এই ঘোষণার মাধ্যমেই যেন সারা বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল, এমন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে কবিতাটিতে।
এরপর কবি জিয়াউর রহমানকে একজন নির্ভীক সেনাপতি ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে তুলে ধরেছেন, যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং বীরত্বের জন্য “বীর উত্তম” খেতাব অর্জন করেছিলেন। কবিতায় কবি লতিফুর রহমান জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বকে একনায়কের শাসনের ভিত্তি ধ্বংসকারী এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
“সৈনিক থেকে শ্রমিক নেতা, হাতে নিয়েছিলে কোদাল, আমজনতার কাতারে মিশেছিলে যেন রাখাল” – এই পঙ্ক্তিতে কবি জিয়াউর রহমানের সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার এবং তাদের কল্যাণে কাজ করার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। খাল খনন, ক্ষুধার্তের অন্নদান এবং কৃষকের সম্মান বৃদ্ধির মতো কাজের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান কীভাবে নতুন জীবনের ধারা নিয়ে এসেছিলেন, তা কবি লতিফুর রহমানের কবিতায় মূর্ত হয়ে উঠেছে।
কবিতায় জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলা গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং ভবিষ্যতের ভোর উন্মোচনকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তারুণ্যের ভালোবাসা ও অগণিত হৃদয়ের অনন্ত পিপাসা হিসেবে তিনি আজও মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন বলে কবি মনে করেন। সততা ও দরিদ্রের সম্রাট হিসেবে জিয়াউর রহমানের গুণাবলী কবিতায় বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে।
কবি লতিফুর রহমান জিয়াউর রহমানকে একজন আদর্শ পিতা, ভক্ত স্বামী এবং কর্তব্যপরায়ণ কবি হিসেবেও দেখেছেন। কর্মঠ, সময়নিষ্ঠ ও দূরদর্শী এই নেতা ঘুম জাগানো পাখির মতো জাতিকে প্রেরণা জুগিয়েছিলেন বলে কবি উল্লেখ করেছেন। তার ডাকে মন্ত্রী ও কর্মচারীরা কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছিলেন এবং উন্নতির পথে ধাবিত হয়েছিলেন। উনিশ দফা কর্মসূচি ও জাতীয়তাবাদের পতাকাবাহী হিসেবে জিয়াউর রহমান নারীর সম অধিকারের দীক্ষাও দিয়েছিলেন বলে কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে।
কৃষকের বন্ধু এবং অকৃত্রিম সহযোগী হিসেবে জিয়াউর রহমানের অবদান কবি লতিফুর রহমানের কবিতায় গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে। কবি বিশ্বাস করেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ চিরকাল অনুকরণীয় এবং তিনি সাধারণ মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত থাকবেন।
পরিশেষে, কবি লতিফুর রহমান গভীর বেদনার সাথে জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড এবং এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন। ঘাতকের প্রতিহিংসার বিপরীতে জিয়াউর রহমানের বুকের রক্তকণা যেন সবুজ শাড়িতে মহিমান্বিত বাংলার বধূ এবং কপালে আঁকা লাল সূর্যের জন্ম দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
“স্বর্ণাক্ষরে লেখা রবে তোমার পবিত্র নাম, ‘জিয়াউর রহমান’, তুমি বাংলার শ্রেষ্ঠতম” – এই দৃঢ় উচ্চারণের মাধ্যমে কবি মো. লতিফুর রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করেছেন এবং তাকে বাংলার শ্রেষ্ঠতম হিসেবে অভিহিত করেছেন। কবিতাটি জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি এক আন্তরিক ও শক্তিশালী শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কালরাতের বজ্রকণ্ঠ-
মার্চের কালো রাতে তুমি ছিলে বিদ্রোহী হুঙ্কার,
কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতা ঘোষণার ঝঙ্কার।
“আমি মেজর জিয়া বলছি” – এই বজ্রকণ্ঠের ধ্বনি,
বাংলার প্রান্তে প্রান্তে জাগালো যুদ্ধের রণভেরী।
শত্রুর সম্মুখে তুমি ছিলে নির্ভীক সেনাপতি,
জেড ফোর্সের অধিনায়ক, বীরত্বের জ্যোতি।
স্বাধীনতা সংগ্রামে তুমি ছিলে অগ্রগামী নেতা,
“বীর উত্তম” খেতাব তোমার, জনতার শ্রদ্ধা ও মমতা।
ভেঙেছিলে একনায়কের শাসনের ভিত্তি,
গড়েছিলে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভীতি।
সৈনিক থেকে শ্রমিক নেতা, হাতে নিয়েছিলে কোদাল,
আমজনতার কাতারে মিশেছিলে যেন রাখাল।
খালে এনেছিলে নতুন জীবনের ধারা,
দিয়েছিলে ক্ষুধার্তের অন্ন, কৃষকের সম্মান বাড়া।
আধুনিক বাংলা গড়ার স্বপ্নে ছিলে বিভোর,
ধাপে ধাপে হেঁটেছিলে ভবিষ্যতের ভোর।
তুমি ছিলে মহানায়ক, তারুণ্যের ভালোবাসা,
অগণিত হৃদয়ে তুমি অনন্ত পিপাসা।
সততার উজ্জ্বল প্রতীক তুমি ছিলে ধ্রুব,
রাজভান্ডারের রক্ষক, দরিদ্র সম্রাট রুদ্র।
আদর্শ পিতার প্রতিচ্ছবি, ভক্ত স্বামীর ছবি,
নও তুমি রাজা-মহারাজা, ছিলে কর্তব্যরত কবি।
কর্মঠ, সময়নিষ্ঠ, ছিলে দূরদর্শী নেতা,
ঘুম জাগানো পাখির মতো, প্রেরণার প্রণেতা।
তোমার ডাকে জেগেছিল মন্ত্রী, রাজ্যের কর্মচারী,
সচল হয়েছিল কর্মের চাকা, উন্নতির সারথি।
উনিশ দফার রূপকার, জাতীয়তাবাদের ধ্বজা,
নারীকে দিয়েছিলে সম অধিকারের দীক্ষা।
কৃষকের বন্ধু তুমি, দিয়েছিলে সহযোগিতা অপার,
চির উন্নত মমশির, তুমি স্মৃতিতে অম্লান রবার।
তোমার আদর্শ চির অনুকরণীয়, হে মহান,
আমজনতার হৃদয়ে তুমি অটুট সম্মান।
প্রতিহিংসার আগুনে পুড়েছে ঘাতকের মন,
তোমার বুকের রক্তকণা জন্ম দিয়েছে অগণন।
সবুজ শাড়িতে মহিমান্বিত বাংলার বধূ,
কপালে আঁকা লাল সূর্য, তুমি ছিলে সে সিন্ধু।
স্বর্ণাক্ষরে লেখা রবে তোমার পবিত্র নাম,
“জিয়াউর রহমান”, তুমি বাংলার শ্রেষ্ঠতম।