ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের ঢল

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজের কোনো কক্ষ এখন খালি নেই।
ঈদের ছুটির ৪র্থ দিন আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দেখা গেছে, দুই কিলোমিটার সৈকতে সমাবেত হয়েছেন অন্তত ৪০ হাজার পর্যটক। দক্ষিণ পাশের কলাতলী এবং উত্তর পাশের সিগাল ও লাবণী পয়েন্টের আরও তিন কিলোমিটার সৈকতে জড়ো হয়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ।
ট্যুরিস্ট পুলিশ ও হোটেল মালিকেরা বলছেন, বিকেল পাঁচটা নাগাদ পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাবে। আগের দিন মঙ্গলবার সৈকতে নেমেছিলেন ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি পর্যটক।
হোটেলমালিকেরা বলছেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত ঈদের ছুটির পাঁচ দিনে সৈকতে অন্তত ৭ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল–রিসোর্ট গেস্টহাউসের ৯৮ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এসব হোটেল-গেস্টহাউস–রিসোর্টগুলোর দৈনিক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৮৭ হাজার। এত পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা।
সমুদ্রে নেমে কোনো পর্যটক নিখোঁজ হয়ে গেলে উদ্ধার তৎপরতার জন্য নিয়োজিত আছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি সেফ লাইফ গার্ডের ২৭ জন কর্মী। বালুচরে স্থাপিত কয়েকটি চৌকিতে বসে তাঁরা সমুদ্রে গোসলে নামা পর্যটকদের ওপর নজর রাখছেন। ভাটার সময় নির্দেশনা অমান্য করে যাঁরা সমুদ্রে গোসলে নামেন, বাঁশি বাজিয়ে তাঁদের তুলে আনার চেষ্টা চালান। তাতে খুব একটা সারা মিলে না জানিয়ে সি সেফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, একঘেয়ে ব্যস্ততম শহুরে জীবন ছেড়ে মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে সৈকতে ছুটে আসেন মনের প্রশান্তির জন্য। কিন্তু একটুখানি অসতর্কতা কিংবা ভুলের কারণে অনেকের কাছে খনিকের এই প্রশান্তি সারা জীবনের কান্না হয়ে দাঁড়ায়।
সমুদ্রে গোসল সেরে হাজারো পর্যটক ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক টমটম, অটোরিকশা কিংবা খোলা জিপগাড়িতে চড়ে ছুটে যান ৮০ কিলোমিটারের কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের দিকে। মেরিন ড্রাইভের দুই পাশে আছে দরিয়ানগর পর্যটনপল্লি, আকাশে ওড়ার প্যারাসেইলিং, হিমছড়ি ঝরনা, পাথুরে সৈকত ইনানী ও পাটোয়ারটেক এবং সর্বশেষ প্রান্তে টেকনাফ জিরো পয়েন্ট সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। দিনের বেলায় মেরিন ড্রাইভ নিরাপদ হলেও রাতে কয়েকটি স্থানে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আবার কেউ কেউ রাতের বেলায় সৈকতের পাশের ঝাউবাগানে ঢুকে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। নিরিবিলি পরিবেশের ঝাউবাগানে ছিনতাইকারীরা তৎপর থাকে।